কুমিল্লার
বিভিন্ন উপজেলার ফল বাজারগুলো ছেয়ে গেছে লিচু, আম, কাঁঠাল, আনারস তরমুজসহ
নানারকম মৌসুমি ফলে। দেশি বিভিন্ন রকম ফলে আকৃষ্ট এখন ফল ক্রেতারা। ফলে
বাজারগুলোতে মৌসুমি ফলের চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে মৌসুমি ফলের চাহিদা বাড়ায়
কদর কমেছে বিদেশি ফলের। ফলে চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে এসব বিদেশি ফলের দামও
কমেছে।
খুচরা ও পাইকারি ফল বিক্রেতারা বলছেন, এখন মৌসুমি ফলের দখলে
ফলের বাজার। ভরা মৌসুমে দেশি ফলের চাহিদা বাড়ায় বিদেশি ফলের চাহিদা কমেছে।
বিদেশি ফলের চাহিদা কমার পাশাপাশি কোন কোন ফলের দামও কমেছে।
সরেজমিনে
কুমিল্লা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন ফল বাজারে দেখা যায়, আত্মীয়তা মেটাতেও
বিদেশি ফলের জায়গা দখল করে নিয়েছে দেশি মৌসুমি ফল। ফল বাজারগুলোতে পসরা
সাজানো নানা জাতের আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম, তরমুজ, আনারসসহ নানা ধরনের
মৌসুমি ফলে আকৃষ্ট ক্রেতারা। সারা বছর পাওয়া ফল থেকে এসব মৌসুমি ফলে
নতুনত্ব থাকায় ক্রেতারা মৌসুমি ফল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন বেশি। এতে দেখা
গেছে বিদেশি ফল থেকে দেশি মৌসুমি ফল বিক্রি হচ্ছে বেশি। বিদেশি ফল মাল্টা
২৫০ থেকে কমে ২০০ টাকায়, আপেল ২৮০ থেকে ২০০ ও ২৩০ টাকায়, আঙুর ৩৫০ থেকে ৩০০
টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে আনারের দাম এখনো আগের মতোই আছে।
কুমিল্লাসদর
কান্দিরপাড়ের ফল বিক্রেতা আলমগীর হোসেন কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এখন বাজারে
দেশি মৌসুমি ফলের সরবরাহ বাড়ায় বিদেশি ফলের দিকে ক্রেতাদের আগ্রহ কম।
বারোমাসি ফল সবসময় পাওয়া যায় বলে ক্রেতারা দেশি মৌসুমি ফল কিনতেই
স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। যে কারণে বিদেশি ফলের দাম কিছুটা কমেছে। দেশি ফলের
সরবরাহ আরও বাড়লে বিদেশি ফলের দাম আরও কমবে।
পাশাপাশি লিচু বিক্রেতা
ওমর ফারুক কুমিল্লা কাগজকে বলেন, বিদেশি ফলের চাহিদা কমেছে, ক্রেতাদের
দৃষ্টি এখন মৌসুমি ফলেই। এখন ক্রেতারা আম লিচুতে ব্যস্ত। দেশি ফলের চাহিদার
তুলনায় বিদেশি ফলের চাহিদা কমেছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মৌসুমি ফলের সরবরাহ
বাড়িয়েছি।
কান্দিরপাড় ফল কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন,বারোমাসি বিদেশি
ফল সবসময়ই বাজারে পাওয়া যায়। মৌসুমি ফল মৌসুম ছাড়া পাওয়া যায় না, তাই
মৌসুমি ফলের চাহিদা বেশি। বোনের বাড়ি যাব তাই লিচু ও আম নিয়েছি।
ব্রাহ্মণপাড়া
উপজেলার সদর বাজারের ফল কিনতে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদেশি ফল সবসময়ই
খাওয়া হয়। মৌসুমি ফল সবসময় পাওয়া যায় না। এ জন্য মৌসুমি ফলের চাহিদা
বেড়েছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খাওয়ার জন্য ৩ কেজি আম কিনেছি।
মৌসুমি
ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, মৌসুমি
সব ফলই স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। আমরা সাধারণত মানুষকে শারীরিকভাবে
সুস্থ থাকতে মৌসুমি ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। মৌসুমি ফলগুলোতে থাকা
বিভিন্ন পুষ্টি উপদান মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। হাড়
মজবুত ও সুস্থ রাখতে মৌসুমি ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হৃদ্যন্ত্রের
সুরক্ষায় মৌসুমি ফল খাওয়া উচিত। এ ছাড়াও মৌসুমি ফল ক্যানসার প্রতিরোধের
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।