বাংলাদেশকে
জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব
আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (৩১ মে) ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ
তথ্য জানানো হয়েছে। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতিসংঘ
সদর দপ্তরে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে
বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন,
‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন
মোকাবিলাসহ জাতিসংঘের অনেক কর্মযজ্ঞে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে
চলেছে। এ কারণেই আমরা বাংলাদেশকে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে
বিবেচনা করি।’ জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার জন্য
গভীর কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি,
বিশেষ করে সে দেশের সেনাবাহিনী তরুণ রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক নিয়োগ করার
ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের
সঙ্গে বাংলাদেশের অভিযোজন ও প্রতিকূলতা মোকাবিলার সক্ষমতার প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নি¤œ আয়ের দেশের কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন। মহাসচিব এই বিষয়ে
বিশ্বসংস্থার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই জন্য বাংলাদেশকে পুরস্কৃত
করা উচিত, শাস্তিদান নয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাতসহ
চলমান বিশ্বের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় মহাসচিবকে তার নেতৃত্বের জন্য
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, রাফায় সংঘাত এড়াতে সেখানে জাতিসংঘ
মহাসচিব যেভাবে নিজে উপস্থিত হয়েছিলেন, শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসী তার প্রশংসা
করেছে। রোহিঙ্গা সংকটের ওপর বিশ্বের আলোকপাত বজায় রাখা, মায়ানমার থেকে
বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার মর্যাদার সঙ্গে
নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন এবং মায়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতির
উন্নতিকল্পে জাতিসংঘের জোরদার ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
মহাসচিব
গত দশকে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির প্রশংসা করলে ড. হাছান মহাসচিব
গুতেরেসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও দক্ষ নেতৃত্বের
কারণেই বাংলাদেশ অনেক আগেই সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানবিক সূচকসহ সব সূচকে
পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে এবং গত কয়েক বছরে অনেক সূচকে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে মাথাপিছু আয়েও
ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের
দৃঢ় অংশীদারত্ব এবং উন্নয়নে সহায়তার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান
এবং বাংলাদেশের জাতিসংঘে যোগদানের অর্ধশত বছরপূর্তিতে গুতেরেসকে বাংলাদেশ
সফরের আমন্ত্রণ জানান। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি
রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা ও মিশনের
কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।