কুমিল্লার
হোমনায় বিনা টেন্ডারে অবৈধ পন্থায় বন বিভাগের রোপণ করা অর্ধশতাধিক সরকারি
গাছ উপড়িয়ে এলজিইডি'র রাস্তা সংস্কারের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী'র
বিরুদ্ধে।
বন বিভাগের এসব গাছ অবৈধ পন্থায় ধ্বংস করায় ও সরকারী রাজস্ব
নষ্ট করার প্রতিকার চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট উপজেলা প্রকৌশী মোঃ
মনিরুজ্জান এর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন বলে জানান হোমনা উপজেলা বন
কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম চৌধূরী।
অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার দুলালপুর বাজার থেকে রামকৃষ্ণপুর বাজার পর্যন্ত এলজিইডি'র রাস্তা সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে।
এতে
রাস্তার দুই পাশের জায়গা প্রশস্ত করতে গিয়ে বন-কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া এবং
কোনো প্রকার দরপত্র না করেই রাস্তার পাশে থাকা বিশাল আকৃতির ৫০-৬০টি গাছ
ভেক্যু (এস্কেভেটর) দিয়ে উপড়িয়ে ফেলে দিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন। এছাড়াও ছোট
বড় অনেকগুলো মেহগনি কাছ কেটে সাবার করে অন্যত্র বিক্রি করে দিছে।
এ
বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানের নিকট জানতে চাইলে এই
প্রতিবেদককে বলেন, "এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। আমি বন-কর্মকর্তাকে
জানিয়েই কাজ শুরু করেছি। টেন্ডার করবে বন বিভাগ, টেন্ডার তো আর আমরা করবো
না।" টেন্ডার ছাড়া কিভাবে বন বিভাগের গাছ উপড়ে ফেললেন? এমন প্রশ্নের জবাবে
তিনি বলেন, "মিমাংসাতি বিষয়ে আর কথা বলতে চাই না। এরপর কিছু বলার থাকলে
অফিসে এসে বলেন। আমার আর কোন বক্তব্য নেই।"
তবে এ বিষয়ে উপজেলা
বন-কর্মকর্তা মো. মাজহারুল চৌধূরী দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, উপজেলা
প্রকৌশলী আমাদেরক কিছুই জানাইনি এবং কোনো অনুমতিও নেয়নি। ঠিকাদার মাইকিং
করে রাস্তার পাশে থাকা গাছ গুলো কেটে নেয়ার জন্য বলেছে। আমাদের অনেক গুলো
মেহগনি গাছ কেটেও নিয়ে গেছে এবং ভেক্যু (এস্কেভেটর) দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির
বড় বড় অনেকগুলো গাছ উপড়িয়ে ফেলে দিয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২-৩ লাখ টাকারও
বেশি হবে। ঠিকাদারকে বাধা দিতে গেলে আমাদের স্টাফদেরকে গালমন্দ ও লাঞ্ছিত
করেছে। তিনি আরও বলেন, গাছগুলো উপড়ে ফেলায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে এবং
পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
জানিয়েছি।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি.এম মো. কবির হোসেন অভিযোগের সত্যতা
স্বিকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবগত হয়ে মামলা করেছি। দ্রুতই
ব্যবস্থা হবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোস্তফা জামান ট্রেডার্সের ফোন
নাম্বারে সাংবাদিকরা বার বার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে মোবাইল
ফোন বন্ধ করে দেয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা ক্ষেমালিকা চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের সাথে কথা
বলেছি। উপজেলা বন-কর্মকর্তা একটি রিপোর্ট দিয়েছে বিভাগীয় বন-কর্মকর্তার
কাছে। সেই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর বন-বিভাগের
সদস্যদের সাথে ঠিকাদারের লোকজন বা ভেক্যু ড্রাইভার খারাপ আচরণ করে থাকতে
পারে, তা আমার জানা নাই।