জামালপুরের সেরা কোরবানির গরু ডন। ৫ বছর বয়সী ডনের ওজন ২৮ মণ। দাম চাওয়া হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। পৌর এলাকার রশিদপুর বটতলায় কৃষক মো. মোশারফ হোসেন লালন পালন করে তৈরি করেছেন এবারের কোরবানির ঈদের জন্য।
মোশারফ হোসেন জানান, জামালপুর সদর উপজেলার গাজীপুর হাট থেকে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের গোয়াল থেকে ৭০ হাজার টাকায় ৫ বছর আগে কিনে আনেন ডনকে।
তিনি বলেন, আমার ছোট ছেলে শ্রাবণ আদর করে তার নাম ডন রাখে। ডন জামালপুর প্রাণি সম্পদ মেলায় ২ বার জেলার শ্রেষ্ঠ গরু হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। প্রথমে বছর ২৩ সালে ৫ হাজার এবং পরের বছর ২৪ সালে ১০ হাজার টাকা পেয়েছে। সিন্ধি জাতের দেশীয় গরুটির খাদ্য তালিকায় আছে ভুট্টা, ছোলাবুট, এংকর ডাউল, ধানের গুড়া, খইল, কলা, খড়, মালটা ও গমের আটার রুটি।
আমার ছেলে নাতিদের যেমন আদর করি। ডনকেও সেই আদরে বড় করেছি। ২৩ সালে এক বার বিক্রির উদ্যোগ নিলেও ছোট ছেলে শ্রাবণের অনুরোধে করিনি। আরও এক বছর লালন পালন করতে হলো।
প্রতিদিন ৫০০ টাকা তার পিছনে খরচ। গরম একদম সহ্য করতে পারে না ডন। ঠাণ্ডায় রাখতে হয় সব সময়। বিদ্যুৎ চলে গেলে তাকে পুকুর পাড়ে বাতাসে নিয়ে রাখতে হয়।
মোশারফ হোসেনের স্ত্রী মা লাভলী বেগম বলেন, আমার ২ ছেলে। ডন আমার আরেক ছেলে। নিজের সন্তানকে বাড়ির বাইরে রেখে যেমন মায়ের চোখে ঘুম আসে না তেমনি ডনকে গোয়ালঘরে রেখে আমার ঘুম আসে না। সারা রাত জেগে থাকি কখন ডন ডাকে। ডনকে বিক্রি করে দেবে শুনলেই দুই চোখ ভরে পানি আসে। আমি ডন বলে ডাকলেই কাছে আসে। মানুষের মতো শান্ত আচরণ। কখন উত্তেজিত হতো না। আমার ছেলেরা বাইরে থেকে আসলেই হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ছোট ছেলে শ্রাবণ বলে, আমিই ওর নাম রেখেছি ডন। কারণ জামালপুরে পর পর ২ বার প্রাণি সম্পদ মেলায় জেলার শ্রেষ্ঠ গরুর পুরস্কার পেয়েছে। ভাই যেমন পুরস্কার পেলে ভাই খুশি হয় আমিও ডন পুরস্কার পাওয়ায় ভাই হিসেবে খুশি হয়েছি।
ডনকে কোরবানি হাটে তুলবেন না মোশারফ হোসেন। বাড়ি থেকেই বিক্রি করতে চান। ডনের আচার আচরণে মোশারফের পরিবার ছাড়াও এলাকার মানুষের মুখে প্রশংসা।