বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
১৪ কার্তিক ১৪৩১
প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করুন
অধ্যাপক ডা: মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪, ১২:১১ এএম |

 প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করুন

প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে যে উন্নয়নের বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটি আসলে কার উন্নয়ন? কথিত এ উন্নয়ন কাদের স্বার্থ রক্ষা করছে? বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নের কাফেলায় এ মডেলের সুবিধাভোগী মূলত একচেটিয়া কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, দূর্নীতিবাজ দখলদার ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। আর এর শিকার প্রাণ-প্রকৃতি, দেশের সাধারণ মানুষ ও পরিবেশ। দেশের সম্পদ, খালবিল, নদীনালা, পাহাড়-বন, উন্মুক্ত জমি লুটেরা শ্রেণির হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে উন্নয়নের উছিলা ধরে, এর মধ্য দিয়ে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পুঁজির নিরঙ্কুশ প্রতিষ্ঠার কাজটি করে যাচ্ছে প্রচলিত ব্যবস্থা।
সংসদীয় কমিটিতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের দেয়া এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর দেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে। শিল্পপতি থেকে শুরু করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা বনভূমি দখলদারিত্বে যুক্ত। বন ও পরিবেশ ধ্বংস করে রাষ্ট্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং প্রভাবশালীদের দখলদারির কারণে সঙ্কুচিত হয়ে আসা বনভূমিতে বিলুপ্তির মুখে পড়েছে অনেক প্রকারের বন্যপ্রাণী। ধারণা করা যায়, গত এ দশকে দেশে শতাধিক হাতির অপমৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। ২০২১ সালেই ৩৪টি হাতির অপমৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালে একটি বেসরকারী পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, দেশে হাতির সংখ্যা ছিল ২৯৭ থেকে ৩২৭ টি। বর্তমানে সে সংখ্যাটি ২০০ তে নেমে এসেছে। হাতি ছাড়াও চিতাবাঘ, উল্লুক, ঘড়িয়ালসহ নানাপ্রাণী আজ বিপন।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য কোনো দেশের মোট ভূমির ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যাচ্ছে ১৯৪৭ সালে দেশের আয়তনের ২৪ শতাংশ বনভূমি ছিল। ১৯৮০-৮১ সনে তা কমে হয় ১৭-২২ শতাংশ। কয়েকদিন আগেই সংসদে প্রকাশ করা হয়েছে দেশে বর্তমানে বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৫.৫৮ শতাংশ। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সঠিক পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে স্থান নির্ধানের ক্ষেত্রে প্রকৃতি-পরিবেশ এবং বনভূমিকে গুরুত্ব না দিলে আগামী এক দশকে দেশের বনভূমি এসে ঠেকবে ৫ শতাংশে।
প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় বিবেকজাগ্রত করে যেসকল প্রস্তাব বাস্তবায়নের দরকার সেগুলো হচ্ছেÑ
১. উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করতে ও উপকূলে পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের স্বার্থে হাওড় বোর্ডের মত উপকূলীয় বোর্ড গঠন করতে হবে। যার মাধ্যমে উপকূল এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও কার্যকরী উন্নয়ন কাজ করতে পারবে। 
২. প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে কোনো প্রকল্প ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা চলবে না। অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে।  শহরে বন্দরে সৌন্দর্য্য বর্ধনের নামে গাছ কেটে, পশু-পাখির আবাসস্থল ধ্বংস করে কোন আয়োজন আর নয়। অবিলম্বে দেশের বিলুপ্তপ্রায় পশু-পাখি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হোক। 
৩. বাংলাদেশের প্রাণ নদী, হাওর-বাওর ও জলাশয়, সব নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার মধ্যদিয়ে নদীভিত্তিক জীবনপ্রবাহ প্রাণসঞ্চার ঘটানো হোক। দখল হয়ে যাওয়া সব নদী অবিলম্বে উদ্ধার করা হোক, হাওরের উপর সকল ধরনের বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করা হোক। 
৪. অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীতে প্রতিবেশী ভারতের দেয়া বাঁধ নির্মাণ ও একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের নদীসমূহ শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায়। ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়ানক মরুকরণ ঘটছে। তাই ভারতের সাথে পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য দ্বিপাক্ষীক ও আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
৫. দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু। এসব মানুষের বাসস্থান ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সুচিহ্নিত প্রকল্প প্রহন করা হোক। 
৬. বৃষ্টির মৌসুমে বন্যার প্রকোপ দেখা দেয়। ফসলের ক্ষতি হয়। কাজ থাকে না শ্রমজীবি মানুষের। এ সময় গ্রামীন কৃষক, ক্ষেতমজুর ও শহরে শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিশেষ রেশরিং চালু করা হোক। কারণ শ্রমজীবী মানুষ বাঁচলে অর্থনীতি বাঁচবে। (সংগৃহিত)
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ












সর্বশেষ সংবাদ
এড. বদিউল আলম সুজন নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল-এর পিপি হওয়ায় মনোহরগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের শুভেচ্ছা
মনোহরগঞ্জে সরকারি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ
কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পি.পি. নিযুক্ত হলেন অ্যাড. সুজন
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
টুটুল পালালেন অস্ট্রেলিয়ায়
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান টুটুল অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গেছেন
কুমিল্লা জেলা পিপি এড. কাইমুল হক রিংকু
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিয়োগ পেলেন ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া
কুমিল্লায় ১৮ দিনে ২৭ অভিযানে ৬৭ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২