ইন্টারনেট পরিষেবায়
বিভ্রাট ও কারফিউসহ চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
স্বাভাবিক সময়ে এই স্থলবন্দরের যে ইয়ার্ডে দেখা যেত পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপের ব্যস্ততা।
সেখানে
এখন কেবলই নীরবতা। কারফিউর প্রভাবে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। আর রপ্তানি
কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি কমেছে প্রায়
অর্ধেকের চেয়েও বেশি। এতে বিপুল অঙ্কে কমেছে রপ্তানি আয়।
স্বাভাবিক
সময়ে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ডলার মূল্যের হিমায়িত মাছ, রড,
সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ফার্নিচারসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০ ধরনের পণ্য ভারতে
রপ্তানি হয়ে থাকে।
তবে দেশজুড়ে কারফিউ ও চলমান অস্থিরতায় গেল ৫ দিনে
নামমাত্র মাছ ও সিমেন্ট ছাড়া রপ্তানি করা যায়নি কিছুই। এছাড়া ইন্টারনেট
বিভ্রাটের কারণে অনলাইন ব্যবস্থা না থাকায় ২০ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত
ম্যানুয়ালি বিল অফ এক্সপোর্টের তথ্য লিপিবদ্ধের মাধ্যমে মাত্র ৫৩ টন মাছ ও
৭০ টন সিমেন্ট রপ্তানি করা হয়েছে। এসব থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি
৬৫ লাখ টাকা।
বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, টানা কয়েক দিনের
অচলাবস্থায় আমাদের অনেক পণ্য রপ্তানি করা যায়নি। হাতেগোনা কিছু মাছবাহী
পিকআপ আসছে। সেগুলো রপ্তানি করা হয়েছে। দ্রুত দূরান্ত থেকে মালামাল আসতে
পারছে না। ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।
আখাউড়া
স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হাসান বলেন,
দূরদূরান্ত থেকে পণ্য বন্দরে পৌঁছাতে না পারায় মাছ ব্যতীত অন্যকোনো পণ্য
রপ্তানি হচ্ছে না। এতে রপ্তানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে
পড়েছেন। আমরা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ইন্টারনেট পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক
করাসহ সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছি। তাহলে আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে
রপ্তানি কার্যক্রম।
আখাউড়া স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার
(রাজস্ব) মো. ইমরান হোসেন বলেন, বন্দরে পণ্য পৌঁছালে তা রপ্তানিতে কোনো
বাধা নেই। ইন্টারনেট বিভ্রাটকালীন সময়ে ম্যানুয়াল বিলিং পদ্ধতিতে বন্দরে
আসা পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে
এলে পুরোনো রূপে ফিরবে বন্দরের কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১৯৯৪ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চলছে।