বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
১৪ কার্তিক ১৪৩১
বাজারে ক্রেতা কম, সবজির দামও কম
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪, ১২:২১ এএম |

 বাজারে ক্রেতা কম, সবজির দামও কম


কোটা আন্দোলনের জের ও চলমান কারফিউর প্রভাবে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে। ক্রেতার কম উপস্থিতির কারণে কমে গেছে সবজির দামও। যদিও আন্দোলনের সময়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়েছে সবধরনের সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্য। বিক্রেতাদের ভাষ্য, আন্দোলনের সময় ও কারফিউ শুরুর দিকে বাজারে সবজির দাম বেড়ে গিয়েছিল। কারণ তখন বাজারে ঠিকমতো পণ্য আসতো না। সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে দাম ছিল বেশি। কিন্তু এখন সরবারহ বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় সবজির দাম কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বাজারের এমন পরিস্থিতি। অন্য সময়ের তুলনায় বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। বিক্রেতারা অপেক্ষায় ছিলেন ক্রেতা সমাগমের।
বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে কম দামে। তিন-চারদিন আগের চেয়ে বাজারে সবজির দাম কিছুটা পড়তির দিকে। তবে টমেটো, গাজর ও পেঁপের মতো কয়েকটি সবজির দাম রয়েছে আগের মতোই।
বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৯০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৪০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০-২০০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আকার ও মান ভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে।
এক্ষেত্রে দেখা যায় টমেটো, গাজর, পেঁপে ও ঝিঙা বাদে প্রায় সবধরনের সবজির দামই কমেছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া আন্দোলন ও কারফিউর সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাঁচামরিচের দাম উঠেছে ৬০০ টাকা কেজি পর্যন্ত। আজকের বাজারে কাঁচামরিচ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে।
কাঁচামরিচের দাম বাড়া-কমা প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, যখন দেশে আন্দোলন চলছিল আবার পরে কারফিউও দিলো তখন কাঁচামরিচ আমি নিজেই ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। আর আজকে বিক্রি করছি অর্ধেকেরও কম দামে, ২০০ টাকা কেজিতে।
তিন-চারদিন আগে কাঁচামরিচ কিনেছি পাল্লা (৫ কেজি) ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু আমার দুই-এক ঘণ্টা পরে আরেকজন কিনে এনেছে পাল্লা তিন হাজার টাকা দিয়ে। আমাদেরকে পাইকাররা বলতো গাড়ি আসতে পারছে না তাই দাম বাড়তি— এভাবেই বলছিলেন বিক্রেতা মো. শাহ আলম।
এদিকে আরেক সবজি বিক্রেতা মো. রাজিব বলেন, বাজারে ক্রেতা কম আসায় আমাদের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের বেচাকেনা হচ্ছে না। আমরা সবজি আনছি কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। আবার কারফিউর কারণে বিকাল ৫টা থেকে বেচাকেনা বন্ধ করে দিতে হয়। পুরো সময় চালু রাখতে পারলে আমাদের ব্যবসা হতো, ক্রেতারাও আসতেন। এখন সবজি কম করে আনি। কারণ বেশি আনলে বেচা হয় না; উল্টো সবজি পঁচে গিয়ে লস বেশি হয়।
এসময় বাজার করতে আসা এক ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলন, এখন বাজারে সবজির দাম অনেকটাই কম। কয়েকদিন আগে যে দাম ছিল, ভাবা যায় না। কাঁচামরিচ কিনতে হয়েছে ৬০০ টাকা কেজিতে।
এদিকে বাজারে আকার ও মান ভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা কেজিতে। এছাড়া আজকে লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৯০ টাকা, চায়না আদা ৩২০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ২৫০-৩০০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় চায়না রসুনের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
দেশি পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বিক্রেতা মো. শরীফ বলেন, এখন ক্রস আর দেশি পেঁয়াজের দাম একই। তবে দেশি পেঁয়াজের দাম ক্রসের থেকে একটু বেশি ছিল। কিন্তু বাজারে ক্রস পেঁয়াজ বেশি থাকাতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমে গেছে।
এদিকে বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৮০০-২০০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৩৬০-৬০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কই মাছ ২২০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০- ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০-১০০০ টাকা, বোয়ালমাছ ৬০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন দোকানে মুরগির লাল ডিম ১৪৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৩৫-১৪০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলেন, কয়েকদিন আগে ডিমের দাম ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এখন আবার কমে গেছে। ডিমের নাকি সাপ্লাইতে সমস্যা হচ্ছিলো, তাই দাম বেড়েছিল বলেছিল আড়তদাররা।
এছাড়া ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮০-২০০ টাকা, কক মুরগি ২৫৫-২৬৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩২০-৩২৫ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এক কেজি প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১১৫ টাকা, মাশকলাইয়ের ডাল ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪৫০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০ টাকা, লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।












সর্বশেষ সংবাদ
এড. বদিউল আলম সুজন নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল-এর পিপি হওয়ায় মনোহরগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের শুভেচ্ছা
মনোহরগঞ্জে সরকারি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ
কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পি.পি. নিযুক্ত হলেন অ্যাড. সুজন
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
টুটুল পালালেন অস্ট্রেলিয়ায়
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান টুটুল অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গেছেন
কুমিল্লা জেলা পিপি এড. কাইমুল হক রিংকু
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিয়োগ পেলেন ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
কুমিল্লায় ১৮ দিনে ২৭ অভিযানে ৬৭ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২