আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক হলে’ সারাদেশে রেল চলাচল শুরু হবে। এর আগে আপাতত এই
গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় রেলভবনে এক বৈঠকে
এই সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা
ইফতেকার আলম রাজন।
তিনি বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেন চলবে।
আমাদের সচিব স্যার, রেলওয়ের ডিজি মহোদয়সহ রেলওয়ের কর্মকর্তারা একটা মিটিং
করেছেন। সেখানে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কোটা
সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেন সেবা
বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগের দিন।
রেলপথ
মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির বুধবার বলেছিলেন, “প্রাথমিকভাবে কারফিউ
শিথিল থাকার সময়ে ঢাকা থেকে কাছাকাছি দূরত্বে কমিউটার ট্রেন চলবে। আন্তঃনগর
ট্রেনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে পরে।”
তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে এসেছে রেল
কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আগামী
‘দুই-তিন দিনের মধ্যে’ ট্রেন চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না।
নাম
প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, "সিদ্ধান্ত
থেকে কেন সরে এসেছে তা বলতে পারব না। তবে আগামী দুই তিন দিন ট্রেন চলবে না
এটা নিশ্চিত।"
বৃহস্পতিবার কোনো ট্রেন চলাচল করেনি।
এ বিষয়ে জানতে
চাইলে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনের মাস্টার মাহমুদুল হাসান বলেন, "আজ সকাল
থেকে দুটি লোকাল ট্রেন চলার কথা ছিল। তবে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
কোনো ট্রেন চলেনি।"
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬
জুলাই মঙ্গলবার ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও ময়মনসিংহ, রংপুরসহ
বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হয়। তাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচলে
বিঘœ ঘটে।
পরের দিন ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিন সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সেদিন ঢাকার মহাখালীতে রেললাইনে আগুন ধরিয়ে অবরোধ করা হয়। ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জায়গাতেও একই ঘটনা ঘটে।
ওইদিন
বিকাল থেকে সরকারি নানা স্থাপনায় নজিরবিহীন হামলা শুরু হয়, ভেঙে দেওয়া হয়
মেট্রো রেলের দুটি স্টেশন। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ট্রেনের সব যাত্রা বাতিল
ঘোষণা করা হয়।
পরের দিন সহিংসতা আরও বেড়ে যায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ ঘোষণা করে সরকার।
শনি
ও রোববার দুই ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও গণপরিবহন চলেনি বললেই
চলে। বুধ ও বৃহস্পতি কারফিউ শিথিলের মেয়াদ সকাল ১০টা থেকে বাড়িয়ে বিকাল ৫টা
করা হয়েছে।
শিথিলের মেয়াদ বাড়ানোর পর রাজধানীতে গণপরিবহন বেড়েছে, সড়কে যানজটও দেখা গেছে; দূরপাল্লার বাস চলতেও দেখা গেছে।