নারী পুলিশ কনস্টেবলকে কামড়ে কারাগারে গেলেন এক নারী ভাইস চেয়ারম্যান। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায়।
অভিযুক্ত নারী ভাইস চেয়ারম্যান হলেন মোহনপুর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবা (৩৫)।
তার
বিরুদ্ধে দুই নারী পুলিশ কনস্টেবলকে কামড় দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ এনে
মামলা করেছেন রাজশাহীর মোহনপুর থানার পুলিশ কনস্টেবল ভুক্তভোগী সান্ত¡না
মহান্ত (২৪)। নিজ থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি।
মামলার পর পরই
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে
অভিযুক্ত নারী ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবাক গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন
বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কেএম এরশাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এই হামলার ঘটনায় দুপুরে হাবিবার নামে মামলা হয়। পরে বিকেলে তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে
হামলার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহীর মোহনপুর থানার ভুক্তভোগী পুলিশ
কনস্টেবল সান্ত¡না মহান্ত বলেন, গত ২২ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসা
শেষে অসুস্থ কনস্টেবল সাথী রানী শীলকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় মোহনপুর
বাজারে উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়।
ইনজেকশন দেওয়ার কারণে সাথী রানীর হাতে ক্যানোলা ছিল।
তিনি বলেন,
বিষয়টি দেখে হাবিবা জিজ্ঞাসা করেন, সাথী রানীর হাতে কী হয়েছে? তারা দু-একটি
কথা বলে সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে হাবিবা হঠাৎ অশ্লীল ভাষায় গালাগালি
করেন। এ সময় হাবিবা এমনও বলেন, মোহনপুর থানায় চাকরি করতে হলে তার কথামতো
চলতে হবে। আমাদেরকে তুই বলে সম্বোধন করেন হাবিবা।
কনস্টেবল সান্ত¡না
অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে নারী ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবা
আমাদের দুজনকে লাথি মারেন। চুল ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। এ সময় তার কাছ
থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আমার কবজিতে কামড় দেন হাবিবা। এ
ঘটনায় আমি পুলিশ কনস্টেবল সাথী আহত হই। আমি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
চিকিৎসা নিই।
জানা গেছে, এমন হুটহাট হামলার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটাননি
নারী ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবা। এর আগেও সোলায়মান নামের এক পুলিশ
উপ-পরিদর্শকের (এসআই) ওপর হামলা চালিয়েছেন হাবিবা। দোলা রানী নামের এক
পুলিশ কনস্টেবলের ওপরও হামলার অভিযোগ রয়েছে এ ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এছাড়া
কয়েকদিন আগে মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য খালেদা
খাতুন এবং মোখলেসুর রহমানকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন হাবিবা।
এমন সব ঘটনায় তার নামে চারটি মামলা আছে।
গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে
তিনি এই আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এবং তার পরিবার
সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নানান ধরনের অভিযোগ তোলেন। ওই সময় প্রতারণার
অভিযোগে তার নামে মামলা হয়। সেই মামলায় ২০২২ সালের জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হয়ে
হাবিবা কিছুদিন কারাভোগ করেন।
হাবিবা রাজশাহী-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদের অনুসারী বলে পরিচিত।