বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
১৪ কার্তিক ১৪৩১
‘আর কোনো বাবা-মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়’
প্রকাশ: শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২:২৩ এএম |

  ‘আর কোনো বাবা-মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়’

“ছেলের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করছি না। আমরা কোনো অভিযোগও করতে চাই না। আর কোনো বাবা-মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়।”
আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ১৯ জুলাই ময়মনসিংহ নগরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত রেদুয়ান হোসেন সাগরের বাবা মো. আসাদুজ্জামান। ২৪ বছর বয়সী রেদুয়ান ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নগরীর চৌরঙ্গীমোড় এলাকায় তাদের বাসা। সাগরের বাবা আসাদুজ্জামান পেশায় ব্যবসায়ী। মা রহিমা খাতুন আট বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। হঠাৎ ছেলের মৃত্যুতে থমকে গেছে পরিবারটির চলার গতি।
শুক্রবার চৌরঙ্গীমোড়ে কথা হয় সাগরের বাবা আসাদুজ্জামানের সঙ্গে। ছেলের মৃত্যুর শোকে পাথর বাবা বলেন, “১৭ জুলাই সাগর সেলুনে গিয়ে চুল-দাড়ি কাটার পর ছেলেটাকে বেশ ভালোই লাগছিল। আমাদের কোনো অসুস্থ আত্মীয় স্বজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসলেই সাগরের সহযোগিতা নিত। বুঝ হওয়ার পর থেকেই সাগর তা করে আসছে।
“১৯ জুলাই বিকালে সাগর বাসা থেকে বের হয় হাসপাতালে কাউকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাসায় না ফেরায় তাকে কল দিয়েছিলাম, রিসিভ করেনি। হঠাৎ ওর মোবাইল থেকে অপরিচিত কেউ কল করে জানায়, সাগর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আছে।”
আসাদুজ্জামান বলেন, “তাৎক্ষণিক আমার ছোট ভাই সাগরের চাচা আকরামুজ্জামান হাসপাতালে ছুটে গিয়ে দেখে, সাগর আর বেঁচে নেই। তার বুকের বাঁ এবং ডান পাশে গুলি লেগেছিল। ওইদিন রাত ৮টার দিকে কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ বাসায় পৌঁছে দেয়। পরদিন সকালে জানাজা শেষে মাদ্রাসা কোয়ার্টার কবরস্থানে দাফন করা হয় সাগরকে।”
শোকে মুহ্যমান বাবা বলেন, “আমার ছেলেটা অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র ছিল। কোনো দিন কারও সঙ্গে বেয়াদবি করেনি। কারো দিকে চোখ তুলে তাকায়নি। তার এমন মৃত্যুতে কষ্ট আছে, তবে দুঃখ করি না। সবই আল্লাহর ইচ্ছা।
“সে দিয়েছে আবার ভালো মনে করে নিয়ে গেছে। না হয় কেন আমার ছেলে হাসপাতালের কথা বলে মিন্টু কলেজ এলাকায় গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবে। তার তো ওখানে যাওয়ার কথা না।”
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, “যা কপালে ছিল তাই হয়েছে; আমরা এ ঘটনায় কাউকে দায়ী করি না। পুলিশ খোঁজখবর নিয়েছে। তারা বলেছে, কোনো অভিযোগ থাকলে করার জন্য। কিন্তু আমরা কোনো অভিযোগ করতে চাই না।ৃ দেশে শান্তি ফিরে আসুক।”
সাগরের চাচা আশরাফুজ্জামান বলেন, “সাগর জন্মের পর থেকে আমাকে বাবা বলে ডাকত। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে আমার কাছেই আবদার করত। আমি তাকে সন্তানের মত মানুষ করেছি। কারণ সে আমাদের বংশের বড় সন্তান।”
এসব কথা বলার সময় আশরাফুজ্জামানের চোখের পানি টলমল করছিল। তিনি বলেন, “সাগর হিসাব বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করলেও আইটিতে খুব দক্ষ ছিল। সবসময় ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্টা করত। ছেলেটা আমাদের এভাবে ছেড়ে চলে যাবে বুঝতে পারিনি। এক বছর আগে তার বাবা বাসা করেছেন; কত স্বপ্ন কত আশা নিয়ে।
“যার জন্য করেছে সেই তো আজ নেই। মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে দিলে কে থাকবে এ বাসায়। সাগর কোনো রাজনীতি করত না। তবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিবের সঙ্গে সাগরের ভালো সম্পর্ক ছিল। আল্লাহ যা ভালো মনে করেছেন, তাই হয়েছে।”
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাগরের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ না করলেও বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।















সর্বশেষ সংবাদ
এড. বদিউল আলম সুজন নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল-এর পিপি হওয়ায় মনোহরগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের শুভেচ্ছা
মনোহরগঞ্জে সরকারি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ
কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পি.পি. নিযুক্ত হলেন অ্যাড. সুজন
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
টুটুল পালালেন অস্ট্রেলিয়ায়
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান টুটুল অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গেছেন
কুমিল্লা জেলা পিপি এড. কাইমুল হক রিংকু
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিয়োগ পেলেন ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া
কুমিল্লায় ১৮ দিনে ২৭ অভিযানে ৬৭ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
কুমিল্লায় শচীন মেলা শুরু আজ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২