চিরায়ত সাহিত্য
সভ্যতার সংকট
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।।
(পূর্ব প্রকাশের পর)
যে যন্ত্রশক্তির সাহায্যে ইংরেজ আপনার বিশ^কর্তৃত্ব রক্ষা করে এসেছে তার যথোচিত চর্চা থেকে এই নিঃসহ দেশ বঞ্চিত। অথচ চক্ষের সামনে দেখলুম জাপান যন্ত্রচালনার যোগে দেখতে দেখতে সর্বতোভাবে কিরকম সম্পদবান হয়ে উঠল। সেই জাপানের সমৃদ্ধি আমি স্বচক্ষে দেখে এসেছি।, দেখেছি সেখানে স্বজাতির মধ্যে তার সভ্য শাসনের রূপ। আর দেখেছি রাশিয়ার মস্কাও নগরীতে জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের আরোগ্যবিস্তারের কী অসামান্য অকৃপণ অধ্যবসায়Ñ সেই অধ্যবসায়ের প্রভাবে এই বৃহৎ স¤্রাজ্যের মূর্খতা ও দৈন্য ও আত্মাবমাননা অপসারিত হয়ে যাচ্ছে।এই সভ্যতা জাতি বিচার করে নি, বিশুদ্ধ মানবসম্বন্ধের প্রভাব সর্বত্র বিস্তার করেছে। তার দ্রুত এবং আশ্চর্য পরিণতি দেখে একই কালে ঈর্ষা এবং আনন্দ অনুভব করছি। মস্কাও শহরে গিয়ে রাশিয়ার শাসনকার্যের একটি অসাধারণতা আমার অন্তরকে স্পর্শ করেছিলÑদেখেছিলেম, সেখানকার মুসলমানদের সঙ্গে রাষ্ট্র-অধিকারের ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে অমুসলমানদের কোনো বিরোধ ঘটে না; তাদের উভয়ের মিলিত স্বার্থসম্বন্ধের ভিতর রয়েছে শাসনব্যবস্থার যথার্থ সত্য ভূমিকা। বহুসংখ্যক পরজাতির উপর প্রভাব চালনা করে এমন রাষ্ট্র শক্তি আজ প্রধানত দুটিজাতির হাতে আছেÑ এক ইংরেজ, আর- এক সোভিয়েট রাশিয়া। ইংরেজ এই পরজাতিয়ের পৌরুষ দলিত করে দিয়ে তাকে চিরকালের মতো নির্জীব করে রেখেছে। সোভিয়েট রাশিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রিক সম্বন্ধ আছে বহুসংখ্যক মরুচর মুসলমান জাতির। আমি নিজে সাক্ষ্য দিতে পারি , এই জাতিকে সকল দিকে শক্তিমান করে তোলবার জন্য তাদের অধ্যবসায় নিরন্তর। সকল বিষয়ে তাহাদের সহযোগী করে রাখবার জন্য সোভিয়েট গবর্নএমন্টের চেষ্টার প্রমাণ আমি দেখেছি। এবং সে সম্বন্ধে কিচু পড়েছি। এইরকম গভর্নএমন্টের প্রভাব কোনো অংশে অসম্মানকর নয় এবং তাতে মনুষ্যত্বের হানি করে না। সেখানকার শাসন বিদেশীয় শক্তির নিদারুণ নিষ্পেষণী যন্ত্রের শাসন নয়। দেখে এসেছি, পারস্যদেশ একদিন দুই য়ুরোপীয় জাতির জাঁতার চাপে যখন পিষ্ট হচ্ছিল তখন সেই জাতি আত্মশক্তির পূর্ণতাসাধনে প্রবৃত্ত হয়েছে। দেখে এলাম, জরথুস্ট্রিয়ানদের সঙ্গে মুসলমানদের এক কালে যে সাংঘাতিক প্রতিযোগিতা ছিল বর্তমান সভ্য শাসনে তার সম্পূর্ণ উপশম হয়ে গিয়েছে। সর্বান্তকরণে আজ আমি পারস্যের কল্যান কামনা করি।আমাদের প্রতিবেশীআফগানিস্থানের মধ্যে শিক্ষা এবং সমাজনীতির সেই সার্বজনীন উৎকর্ষ যদিচ এখনো ঘটে নি কিন্তু তার সম্ভাবনা অক্ষুণœ রয়েছে, তার একমাত্র কারণÑ সভ্যতাগর্বিত কোনো য়ুরোপীয় জাতি তাকে আজও অভিভূত করতে পারে নি। এরা দেখতে দেখতে চার দিকে উন্নতির পথে, মুক্তির পথে অগ্রসর হতে চলল।
ভারতবর্ষ ইংরেজের সভ্যশাসনের জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে তলিয়ে পরে রইল নিরুপায় নিশ্চলতার মধ্যে।চৈনিকদের মতন এতবড়ো প্রাচীন সভ্য জাতিকে ইংরেজ স্বজাতির স্বার্থসাধনের জন্য বলপূর্বক অহিফেনবিষে জর্জরিত করে দিলে এবং তার পরিবর্তে চীনের এক অংশ আত্মসাৎ করলে। এই অতীতের কথা যখন ক্রমশ ভুলে এসেছি তখন দেখলুম উত্তর-চীনকে জাপান গলধঃকরণ করতে প্রবৃত্ত;ইংল্যা-ের রাষ্ট্রনীতিপ্রবীণেরা কী অবজ্ঞাপূর্ণ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে সেই দস্যুবৃত্তিকে তুচ্ছ বলে গণ্য করেছিল। পরে এক সময়েস্পেনের প্রজাতন্ত্র-গভর্ণমেন্টের তলায় ইংল্যন্ড কিরকম কৌশলে ছিদ্র করে দিলে, তাও দেখলাম এই দূর থেকে। সেই সময়েই এও দেখেছি, একদল ইংরেজ সেই বিপদগ্রস্ত স্পেনের জন্য আত্মসমর্পন করেছিলেন। যদিও ইরেজের এই ঔদার্য প্রাচ্য চীনের সংকটে যথোচিত জাগ্রত হয় নি, তবুও য়ুরোপীয় জাতির প্রজাস্বাতন্ত্র রক্ষার জন্য যখন তাদের কোন বীরকে প্রাণপাত করতে দেখলুম তখন আবার একবার মনে পড়ল ইংরেজকে একদা মানবহিতৈষীরূপে দেখেছি এবং কী বিশ^াসের সংগে ভক্তি করেছি। য়ুরোপীয় জাতির স্বভাবগত সভ্যতার প্রতি বিশ^াস ক্রমে কী করে হারানো গেল তারই শোচনীয় ইতিহাস আজ আমাকে জানাতে হল। সভ্য শাসনের চালনায় ভারতবর্ষের সকলের চেয়ে যে দুর্গতি আজ মাথা তুলে উঠেছে সে কেবল অন্ন বস্ত্র শিক্ষা এবং আরোগ্যের শোকাবহ অভাব মাত্র নয়; সে হচ্ছে ভারবাসীর মধ্যে অতি নৃশংস আত্মবিচ্ছেদ, যার কোন তুলনা দেখতে পাই নি। ভারতবর্ষের বাইরে মুসলমান সায়ত্তশাসন- চালিত দেশে। আমাদের বিপদ এই যে, এই দুর্গতির জন্যে আমাদেরই সমাজকে একমাত্র দায়ী করা হবে। কিন্তু এই দুর্গতির রূপ যে প্রত্যহই ক্রমশ উৎকট হয়ে উঠছে, সে যদি ভারতশাসনযন্ত্রের ঊর্ধ্বস্তরে কোন- এক গোপন কেন্দ্রে প্রশ্রয়ের দ্বারা পোষিত না হত তাহলে কখনোই ভারত ইতিহাসের এতবড়ো অপমানকর অসভ্য পরিনাম ঘটতে পারত না। ভারতবাসী যে বুদ্ধিসামর্থ্যে কোন অংশে জাপানের চেয়ে ন্যূন, এই কথা বিশ^াসযোগ্য নয়। এ দুই প্রাচ্য দেশের সর্বপ্রধান প্রবেদ এই, ইংরেজ শাসনের দ্বারা সর্বত্রভাবে অধিকৃত অভিভ’ত ভারত, আর জাপান এইরূপ কোন পাশ্চাত্য জাতির পক্ষ ছায়ার আবরণ থেকে মুক্ত। এই বিদেশীরা সভ্যতা , যদি একে সভ্যতা বলো, আমাদের কী অপহরণ করেছে তা জানি; সে তার পরিবর্তে দ-হাতে স্থাপন করেছে যাকে নাম দিয়েছে ‘ল এন্ড অর্ডার’, বিধি এবং ব্যবস্থা, যা সম্পুর্ণ বাইরের জিনিস, যা দারোয়ানি মাত্র। পাশ্চাত্য জাতির সভ্যতা-অভিমানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা অসাধ্য হয়েছে। সে তার শক্তিরূপ আমাদরে দেখিয়েছে মুক্তিরূপ দেখাতে পারেনি। অর্থাৎ মানুষে মানুষে যে সম্বন্ধ সবচেয়ে মূল্যবান এবং যাকে যথার্থ সভ্যতা বলা যেতে পারে তার কৃপণতা এই ভারতীয়দের উন্নতির পথ সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে দিয়েছে । অথচ আমার ব্যক্তিগত সৌভাগ্যক্রমে মাঝে মাঝে মহদাশয় ইংরাজের সঙ্গে আমরা মিলন ঘটেছে। এই মহত্ব আমি অন্য কোন জাতির কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখতে পাই নি। এঁরা আমার বিশ^াসকে ইংরেজ জাতির প্রতি আজও বেঁধে রেকেছেন। দৃষ্টান্তস্থলে এন্ড্রুজের নাম করতে পারি ; তার মধ্যে যথার্থ ইংরেজকে, যথার্থ খৃষ্ঠানকে, যথার্থ মানবকে বন্ধুভাবে অত্যন্ত নিকটে দেখবার সৌভাগ্য আমার ঘটেছিল। আজ মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষণীতে স্বার্থ সম্পর্কহীন তাঁর নির্ভীক মহত্ত্ব অরো জ্যোতির্ময় হয়ে দেখা দিয়েছে। তাঁর কাছে আমার এবং আমাদের সমস্ত জাতির কৃতজ্ঞতার নানা কারণ আছে কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে একটি কারণে আমি তাঁর কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞ। তরুণবয়সে ইংরেজি সাহিত্যের পরিবেশের মধ্যে যে ইংরেজ জাতিকে আমি নির্মল শ্রদ্ধা একদা সম্পূর্ণ চিত্তে নিবেদেন করেছিলেম আমার শেষ বয়সে তিনি তারই জীর্ণতা ও কলঙ্ক-মোচন সহায়তা করে গেলেন। তাঁর স্মৃতির সঙ্গে এই জাতির মর্মগত মাহত্ম্য আমার মনে ধ্রুব হয়ে থাকবে আমি এঁদের নিকটতম বন্ধু বলে গণ্য করেছি এবং সমস্ত মানব জাতির বন্ধু বলে মান্য করি। এঁদের পরিচয় আমার জীবনে একটি শ্রেষ্ঠ সম্পদরূপে সঞ্চিত হয়ে রইল। আমার মনে হয়েছে, ইংরেজের মহত্তক্বে এঁরা সকল প্রকার নৌকোডুবি থেকে উদ্ধার করতে পারবেন। এঁদের যদি না দেখতুম এবং না জানতুম তাহলে পাশ্চাত্য জাতির সম্বন্ধে আমার নৈরাশ্য কোথাও পেতো না।
এমন সময় দেখা গেল, সমস্ত য়ূরোপেই বর্বরতা কিরকম নগ্ন দন্ত বিকাশ করে বিভীষিকা বিস্তার করতে উদ্যত। এই মানব পীড়নের মহামারি পাশ্চাত্য সভ্যতার মজ্জার ভিতর তেকে জাগ্রত হয়ে উঠে আজ মানবাত্মার অপমানে দিগন্ত থেকে দিগন্ত পর্যন্ত বাতাস কুলষিত করে দিয়েছে। আমাদের হতভাগ্য নিঃসহায় নীরন্ধ্র অকিঞ্চনতার মধ্যে আমরা কি তার কোন আবাশ প্ইানি। ভাগ্য চক্রের পরিবর্তনের দ্বারা একদিন ইংরেজকে এই ভারতসা¤্রাজ্য ত্যাগ করে যেতে হবে। কিন্তু কোন ভারতবর্ষকে সে পিছনে ত্যাগ করে যাবে? কী লক্ষ্মীছাড়া দীনতার আবর্জনাকে। একাধিক শতাব্দীর শাসন ধারা যখন শুষ্ক হয়ে যাবে, তখন একেই বিস্তীর্ণ পঙ্কশয্যা দুর্বিসহ নি®ফলতাকে বহন করতে থাকবে। জীবনের প্রথম আরম্ভে সমস্ত মন থেকে বিশ^াস করেছিলুম য়ুরোপের অন্তরের সম্পদ এই সভ্যতার দানকে। আর আজ আমার বিদায়ের দিনে সে বিশ^াস একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেল। আজ আশা করে আছি, পরিত্রাণ কর্তার জন্ম দিন আসছে আমাদের এই দারিদ্র লাঞ্ছিত কুটিরের মধ্যে; অপেক্ষা করে থাকব, সভ্যতার দৈববাণী সে নিয়ে আসবে, মানুষের চরম আশ^াসের কথা কথা মানুষকে এসে শোনাবে এই পূর্ব দিগন্ত থেকেই। আজ পাড়ের দিকে যাত্রা করেছি পিছনের ঘাটে কী দেখে এলুম, কী রেখে এলুম, ইতিহাসের কী অকিঞ্চিৎকর উচ্ছিষ্ট সভ্যতাভিমানের পরিকীর্ণ ভগ্নস্তুপ! কিন্তু মানুষের প্রতি বিশ^াস হারানো পাপ, সে বিশ^াস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করবো। আশা করব , মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। আর-একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে। মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভাবকে চরম বলে বিশ^াস করাকে আমি অপরাধ মনে করি।
এই কথা আজ বলে যাব, প্রবলপ্রতাপশলীরও ক্ষমতা মদমত্ততা আত্মসম্ভরিতা যে নিরাপদ নয় তাই প্রমান হবার দিন আজ সম্মুখে উপস্থিত হয়েছে এই প্রমানিত হবে যে-
ওই মহামানব আসে,
দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে
মর্তধূলির ঘাসে ঘাসে।
সুরলোকে বেজে উঠে শঙ্খ,
নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক,
এলো মহাজন্মের লগ্ন
আষাঢ়নামা
ফিরোজ আলম
আষাঢ় এসেছে তার রুপ নিয়া,
সকাল থেকে নিভু নিভু করে যে দিয়া,
চারিদিকে ফুটেছে কদম আর কেয়া।
তপ্ত ধরনী হলো সতেজ,
প্রকৃতিতে তাই খুশির আমেজ।
ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ,
মাঝে মাঝে বইছে দমকা বাতাস,
বজ্রপাত আর বিজলী চমক
বাহিরে না যাওয়ার দিচ্ছে ধমক।
খাল-বিল, মাঠে ঘাটে বর্ষার আগমনী,
সবখানে জমে বাড়ছে যে পানি।
নতুন পানি পেয়ে মাছেরা করছে জলকেলি,
মনানন্দে ব্যাঙেরা করছে কোলাকুলি।
পুটি আর খোলসে বুড়ি,
পরেছে লাল শাড়ি,
মনানন্দে ঘুরছে এ-বাড়ি ও-বাড়ি,
তাই দেখে নাচছে বাঙাচি,
খুশির যে ছড়াছড়ি।
রিমঝিম বৃষ্টি নুপুর ছন্দ,
প্রাণে জাগে শিহরণ, মনে বয়ে আনন্দ।
বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছে, হচ্ছে না বন্ধ,
বিত্তবানের চিত্তানন্দ,
কর্মজীবীর কপাল যে মন্দ,
বিত্তবান খেয়ে বুনা খিচুড়ি,
থাকবে শুয়ে দিয়ে কাঁথা মুড়ি,
আর গরিবের কষ্ট সারা বর্ষা জুড়ি।
গাঁয়ের বধু বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রোজ,
তৈরি করে নানা রকম ভোজ।
করে নানা আয়োজন,
খুশি রাখে যে বরের মন।
ধেনু ডাকে ঘন ঘন গোয়ালে,
বকরি বাঁধা আছে খোয়াড়ে,
ছেলেপুলে পিছলিয়ে পড়ে
বর্ষার কাদা জলে।
মুরগির বাচ্চা ভিজে একাকার...
লুকিয়ে আছে যে ঘরের কোনে।
খুশি অখুশির দোলাচলে বর্ষার আগমনে।
ব্যথামুক্ত পৃথিবী
শাহজালাল সরকার
খবরের কাগজে ছাপা হয় অপগমনের বেশুমার চিত্র
ইন্টারনেটে ভেসে আসে অগণিত লাশের নিদারুণ মূর্তি
সবল কর্তৃক দূর্বলের রক্তপাত আজ পুরো বিশ্বময়
অপরাধের ভারে পৃথিবী আজ নুয়ে পড়েছে অনেকখানি।
দ্বন্দ্ব, সংঘাত, দলাদলিতে আজ জড়িয়ে পড়েছে বসুন্ধরা
মারো বোমা, হানো আঘাত, করো নিপাত; এই যেনো নিত্যকার বুলি
মানুষ হয়ে মানুষের বিনাশ, আজ কতোভাবেই না চলছে!
বিষাদে পূর্ণ পৃথিবী আজ যুদ্ধের দামামায় অশান্ত, অতিষ্ঠ ।
মানুষ মানুষকে হত্যার কত কৌশল আবিষ্কার করে নিয়েছে!
পারমানবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তা, খাবারে ফরমালিনের বিষক্রিয়া
এগুলো মানুষ মারার আধুনিক অভিনব মরনাস্ত্র।
আরও যে কত কৌশল আবিষ্কার হবে, কে জানে?
পৃথিবী আজ অনেকটাই ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত
একদন্ড শান্তির পরশ পেলেই যেনো বাঁচে।
বিভীষিকাময় অশান্ত, অস্থির এই ধরাধমে
এক ব্যথামুক্ত পৃথিবীর দাবী আজ সর্বাগ্রে।
জেনে যাবার পর
খলিলুর রাহমান শুভ্র
আমি ভালো আছি জেনে আপনার ভালো লাগছে না
আপনার মনে বেজায় কষ্ট কেন আপনার দ্বারে যাচ্ছি না
কেন আপনার মধুনাম কীর্তন সুরে গাচ্ছি না
কেন আপনার পদচিহ্নে প্রণাম ঠুকে দিচ্ছি না
কেন আপনার হাতের নিচে হাত পেতে রাখছি না
কেন আপনার চোখ ইশারায় অথৈ জলে নামছি না
আপনি কী চান,আমি কী?জেনে যাবার পর
আমার ভেতর আমি আছি, আমিই আমার ঘর
আমি আছি আমায় নিয়ে আমি আমার সব
আমিই এখন ফুলতরু, মাটি-ফুলের টব
আপনার জন্যেই চিনেছি আমি আমার ঠিক মোকাম
আমি এখন আমার সুরে গাইছি আমার নাম