চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের একদিন পর সাহিদা আক্তার নামে এক
কিশোরী বধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সাহিদা উপজেলার শুভপুর
ইউনিয়নের কটপাড়া গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী মিজানুর রহমানের প্রথম সংসারের
মেয়ে ও স্থানীয় কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
রোববার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন। এরআগে
শুক্রবার তার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,
লালমাই উপজেলার মিতল্লা গ্রামের প্রবাসী ফারুক মিয়ার ছেলে আল আমিনের সাথে ৫
লাখ টাকা দেনমোহরে গত শুক্রবার সাহিদা আক্তারের বিবাহ সম্পন্ন হয়। শনিবার
আল আমিনের বাড়িতে বৌ-ভাত অনুষ্ঠান শেষে স্বজনরা সাহিদা আক্তারকে বাড়িতে
নিয়ে আসে। শনিবার রাতেই নতুন জামাই আল আমিন শ^শুড় বাড়িতে বেড়াতে আসে। রাতের
খাবার খেয়ে নব দম্পত্তি ঘুমিয়ে পড়ে। রোববার সকাল ৭টায় নানী খুরশিদা বেগমের
চিৎকারে ঘর ও বাড়ির পাশে লোকজন ছুটে এসে দেখে-সাহিদা আক্তার সিড়ির রুমে
সিলিং এর সাথে ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিছুক্ষণ পর নতুন জামাই আল
আমিনও ঘুম থেকে উঠে এমন অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে আরও
জানা গেছে, সাহিদা আক্তার কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মেধাবী
শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা মিজানুর রহমান বর্তমানে বাহরাইনে অবস্থান করছেন।
সাহিদা আক্তারের সৎ মা মুন্নি বেগম কারো সাথে পরামর্শ না করেই নিজের মত করে
শুক্রবার তাঁর নিকটাত্মীয় দুবাই প্রবাসী ফারুক মিয়ার ছেলে আল আমিনের সাথে
বিয়ে সম্পন্ন করেন।
সাহিদা আক্তারের স্বামী আল আমিন বলেন, ‘শনিবার রাতের
খাবার শেষে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। রোববার সকালে নানী শ্বাশুড়ি খুরশিদা বেগমের
চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি-আমার নববধু সাহিদা আক্তার গলায় ওড়না পেছিয়ে
আত্মহত্যা করেছে। গত দুইদিনে আমাদের মাঝে কোন ধরনের বাকবিতন্ডা হয়নি। সে
বিয়ের দিন থেকে চুপচাপ ছিল। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে আমার জানা নেই’।
সাহিদা
আক্তারের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার বোন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী
ছিলেন। পড়ালেখায় সে ছিল মেধাবী। প্রায় ৮ বছর আগে আমার মা মৃত্যুবরন করে।
এরপর আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমার সৎ মা মুন্নি বেগম শুক্রবার বোনকে
সৎ মায়ের নিকটাত্মীয়ের নিকট বিয়ে দেয়। আমার বোন আত্মহত্যা করেছে’।
সাহিদা
আক্তারের সৎ মা মুন্নি বেগম বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি-সাহিদা আক্তার
গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নবম শ্রেণীর মেয়েকে কেন বাল্য বিবাহ
দিলেন প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেন নাইনে পড়লেও তার বয়স ১৮ বছরের বেশি
হয়েছে।এছাড়া বিয়েতে সে কোন প্কার অনাপত্তি করেনি।
চৌদ্দগ্রাম থানার
উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে সুরতহাল
শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে পাঠানো হবে’।