বৈষম্যবিরোধী ছাত্র
আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বাইরে নতুন করে রবিবার (২৮ জুলাই) আন্দোলনের ডাক
দেন ২৮ জন সমন্বয়ক। তাদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (২৯ জুলাই) রাজধানীসহ
সারা দেশে ‘ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ’ কর্মসূচি এবং ‘প্রতিবাদ সমাবেশ’ কর্মসূচির
চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর মিরপুর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি,
বাড্ডা, ইসিবি ও উত্তরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেছেন
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি
ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ৮০ জন
শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আটকের
সংখ্যা জানানো হয়নি।
সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
মোড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর
মধ্যে বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর ইসিবি, বাড্ডা ও উত্তরা এলাকায় জড়ো হওয়া
একদল বিক্ষোভকারীকে লাঠিপেটা করে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। কয়েকজন বিক্ষোভকারী
গলি থেকে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে।
আজ ইইসবি চত্বর থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়। আর উত্তরা থেকে আটক করা ১২ জন আন্দোলনকারীকে।
বেলা
২টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো
হওয়ার চেষ্টাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগে থেকে অন্তত ১৫ জনকে আটক করা
হয়। বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও ছিল পুলিশের কঠোর
অবস্থান। শিক্ষার্থীরা সেখানে সমবেত হতে চাইলে আটক করা হয় তিন জনকে।
তবে
আটক শিক্ষার্থীদের কেউ ছাত্র নয় উল্লেখ করে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব
কুমার সরকার বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষ
আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে। তারা অন্ধকারে থেকে এসব কর্মসূচি দিচ্ছে।’
দুপুর
১টার দিকে সায়েন্সল্যাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন কিছু শিক্ষার্থী। পুলিশের
বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করার চেষ্টা করেন তারা। তখন তাদের ধাওয়া
করে পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। সেখান থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়।
রাজধানী মিরপুর-১০ ও ধানমন্ডির স্টার কাবাবের সামনে থেকে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।
মিরপুর
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির জানান, বিক্ষোভ
কর্মসূচির সময় মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
ধানমন্ডির স্টার কাবাবের সামনে থেকে ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছেন নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম।
এর
আগে রবিবার (২৮ জুলাই) ডিবি হেফাজত থেকে কোটা আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক যৌথ
বিবৃতি দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। তবে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ দাবি
করে, ওই বিবৃতি স্বতস্ফূর্তভাবে দেওয়া নয়, বরং তাদের জিম্মি করে বক্তব্য
পাঠ করানো হয়েছে। পরে তারা ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা
করেন।