পানি নামতে শুরু করায় বন্যা
পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কমে আসছে নদীর পানিও। বিপদসীমার নিচে নেমেছে অনেক
নদীর পানি। তবে এখনও কুশিয়ারা, গোমতি ও মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর
দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ
সোমবার (২৬ আগস্ট) দেশের তিনটি নদীর তিন স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে দিয়ে
প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল রবিবার ৪ নদীর ৬টি স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে
ছিল। এরমধ্যে গোমতির নদীর কুমিল্লা স্টেশনের পানি ৭৮ থেকে নেমে আজ ৪৫
সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
এছাড়া মুহুরী নদীর পরশুরাম স্টেশনের পানি
আজও বিপদসীমার ওপরে আছে। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পানির উচ্চতা
সম্পর্কে জানা যায়নি। এদিকে রবিবার (২৫ আগস্ট) কুশিয়ারা নদীর পানি তিন
স্টেশনে বিপদসীমার ওপরে থাকলেও আজ সোমবার তা নেমে শুধু অমলশীদ পয়েন্টের
পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
রবিবার বিপদসীমার ওপরে থাকা মনু নদীর মৌলভিবাজার স্টেশনের পানি আজ বিপদসীমার নিচে নেমে গেছে।
পূর্বাভাসে
বলা হয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান
নদীগুলোর পানি কমা অব্যাহত আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং
ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত
পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি কমা অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে
ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নি¤œাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
অব্যাহত আছে।
মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলার নদীগুলোর পানি বিপদসীমার নিচে
নেমে এসেছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের
উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময়
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি
কমতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের
পূর্বাঞ্চল ও উজানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ
অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি কমতে পারে এবং আশেপাশের
নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার
নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে, তবে কোনও কোনও স্থানে
স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায়
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উজানে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ
অঞ্চলের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু,
মাতামুহুরি, কর্ণফুলী, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সময় বিশেষে
বাড়তে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে,
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা
আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায়
সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে যশোরে ২২২ মিলিমিটার। এছাড়া বরগুনায় ১২০, বরিশালে
১০৪, টেকনাফে ১০১, পটুয়াখালী ৮৮, নোয়াখালী ৮৭, গোপালগঞ্জের হরিদাশপুরে ৮৫,
কক্সবাজারে ৮২ এবং বান্দরবানের লামায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা
হয়েছে।
এদিকে উজানে আসামের তেজপুরে ১৯, ত্রিপুরায় ১২ এবং চেরাপুঞ্জিতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।