নিজস্ব প্রতিবেদক: ভয়াবহ বন্যায় এখন দিশেহারা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বানভাসি মানুষ। এরই মধ্যে বানের পানির তীব্র স্রোতে উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। সপ্তাহখানেক পর মাঠ থেকে এসব ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি ছিল কৃষকদের। কিন্তু এর আগেই সব শেষ হয়ে গেছে।
কষ্টের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কাঁদছেন কৃষকরা। অনেকে বিলাপ করতে করতে মুর্ছা যাচ্ছেন। তবে শনিবার ও রোববার অনেক কৃষক চেষ্টা করেছেন পানির নিচ থেকে আধাপাকা ধান কেটে উঁচু কোনো যায়গায় রাখতে। তবে সেটি খুব বেশি সম্ভব হয়নি। কারণ এরই মধ্যে ফসলের মাঠ ১০ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ রানা বলেন, “ভয়াবহ বন্যায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া রোপা আমনের ১৬০ হেক্টর বীজতলা ও আবাদ করা আমন ১২’শ হেক্টর এবং দুই’শ হেক্টর জমির শাকসবজি তলিয়ে গেছে।
“এখনও যেসব জমির ধান কাটা সম্ভব, সেগুলো কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেটি খুব বেশি সম্ভব হচ্ছে না।”
উপজেলার দীর্ঘভূমি গ্রামের কৃষক হানিফ মিয়া বলেন, “আমি ৫০ শতক জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছিলাম। পরিশ্রমে ফলানো সেই ধান কয়েকদিন পর ঘরে তোলার কথা থাকলেও বন্যায় সব তলিয়ে গেছে। রোববার চেষ্টা করেছি কিছু ধান কেটে আনার। কিন্তু পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেটিও সম্ভব হয়নি।”
নাগাইশ এলাকার কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, “আমার সব ফসল এখন পানির নিচে। জমির মধ্যে ১০ থেকে ১৫ ফুট পানি। চেষ্টা করেও সোনালি ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। স্বপ্নের ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কী খেয়ে বাঁচবো, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”