কুমিল্লায়
গোমতী ও সালদানদী ভাঙা পড়ে বুড়িচং - ব্রাহ্মণপাড়ার মানুষ পানি বন্দী হয়ে
পড়ে। বাড়ি ঘর তলিয়ে চলাচলের একমাত্র সম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে নৌকা।
ঢলের
পানিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি, ডুবছে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। বিভিন্ন এলাকায়
বাড়িঘর ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া চলাচল করা যাচ্ছে না। এতে এক ভয়াবহ
পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে ব্রাহ্মণপাড়ার - বুড়িচং বন্যা পরিস্থিতি। এরই
প্রেক্ষিতে ডিঙি নৌকা তৈরির হিড়িক পড়েছে দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
গতকাল
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কারিগররা বিভিন্ন আকারের
ডিঙি নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ তৈরি করা নৌকায় আলকাতরা
মাখাচ্ছেন। কেউ কেউ কাঠ কাটা ও জোড়া দেওয়ার কাজ করছেন। সব মিলিয়ে কারিগরদের
জন্য দম ফেলার ফুরসত নেই।
প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে
আসছেন ক্রেতারা। কোনো কোনো ক্রেতা অগ্রিম বায়না দিতে দাঁড়িয়ে আছেন। দাম
কিছুটা বেশি হলেও এই বিপদের সময়ে নৌকা পাওয়াই বড় কথা। ছোট-বড় হিসেবে
প্রতিটি নৌকা বিক্রি হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন দামে।
জানা গেছে, সাধারণত এই
উপজেলায় একসময় নৌকার কদর ছিল। তবে গত তিন দশকে রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব
উন্নয়নের ফলে নৌকার চাহিদায় ভাটা পড়ে। তাই এই উপজেলায় তেমন কোনো নৌকা নেই।
তবে এবার গোমতী নদীর ও সালদা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা
প্লাবিত হয়েছে। অন্যান্য এলাকাও প্লাবিত হচ্ছে। যার ফলে স্মরণকালের এই
ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে, এ জন্য দীর্ঘ বছর পর আবারও
দুই উপজেলায় নৌকার চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে নৌকা তৈরির কারিগররা নৌকা
তৈরিতে মনোনিবেশ দিয়েছেন। ক্রেতারাও নৌকা কিনতে ভিড় করছেন।
নৌকা তৈরির
কারিগর দীলিপ সূত্রধর বলেন, সারা বছর কাঠমিস্ত্রির কাজ করে বিভিন্ন
আসবাবপত্র তৈরি করি। উপজেলায় নৌকার তেমন চাহিদা নেই। তাই পুরো বছরে বর্ষা
মৌসুমে দু-চারটা নৌকা তৈরি করি। তবে এ বছর দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো
ব্রাহ্মণপাড়া- বুড়িচং বন্যাকবলিত হওয়ায় হঠাৎ করে নৌকার চাহিদা তৈরি হয়েছে।
তাই আমরা কারিগররা এখন সব কাজ ফেলে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছি।
এ
ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা দুলালপুরের বিশিষ্ট সমাজ সেবক আরিফুল ইসলাম
ভূইয়া বলেন, এক সময় বুড়িচং - ব্রাহ্মণপাড়া মানুষ নৌকা ছাড়া চলাচল অসম্ভব
ছিল। রাস্তা ঘাট উন্নতি হওয়ার নৌকায় চাহিদা কেমে গেছে।কিন্তু এ বছর গোমতী ও
সালদানদী ভাঙা পড়ে বুড়িচং - ব্রাহ্মণপাড়া প্রায় সব এলাকার তলিয়ে যায় এর
ফলে এ এলাকার মানুষের একমাত্র সম্ভব নৌকা হয়ে দাড়িয়েছে।তাই এ এলাকার মানুষ
নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে।