কুমিল্লার
দেবিদ্বার উপজেলার বাঙ্গরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিমের
পদত্যাগর দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) দুপুরে
বিদ্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। মো. সেলিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র
আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম দেবিদ্বার উপজেলার আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি।
বিক্ষোভ
সমাবেশের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর প্রধান শিক্ষককের অপসারণের
দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে
বক্তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক সেলিম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ শিক্ষক ও
শিক্ষার্থীদের হয়রানি করতেন। তিনি একজন ‘দলবাজ’ প্রধান শিক্ষক। একই সাথে
তিনি নারী কেলেঙ্কারি, অর্থ কেলেঙ্কারী ও দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সাধারণ
শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালাতেন। কোন
কিছুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা এমপির সাথে কথা বলেন, অমুকের
সাথে কথা বলেন, বলে আমাদের ফোন ধরিয়ে দিতেন। গত বছর তাকে নারী কেলেঙ্কারি
অভিযোগে হাতে নাতে ধরে তার অফিস কক্ষে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অবরুদ্ধ করে
রাখে। পরে তার দলীয় ক্যাডার বাহিনী ও পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে
যায়।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে
দাঁড়াইনি, দাঁড়িয়েছি একজন লম্পট ও নারী কেলেঙ্কারীর বিরুদ্ধে। তিনি কোন
শিক্ষক হতে পারেন না। তিনি সরকারি চাকরি করে সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত
থেকে স্কুলে প্রভাব বিস্তার করে সকলকে জিম্মি করে রাখতেন। তার অপকর্মের
বিরুদ্ধে মুখ খোলারও সাহস কারও হয়নি। তিনি শিক্ষার্থীদের সামনেই সাধারণ
শিক্ষকদের লাঞ্চিত ও অপমান করতেন। অভিভাবকদের সাথে র্দুব্যবহার করতেন। তিনি
ছুটি না নিয়েই দিনের পর দিন স্কুলে অনুপস্থিত থেকেছেন। বিদ্যালয়ের অফিস
কক্ষে বহিরাগত দলীয় ক্যাডারদের সাথে বিভিন্ন সময়ে আড্ডা দিতেন। তিনি
ম্যানিজিং কমিটি ছাড়া নিজের মনমত সিদ্ধান্ত নিতেন। শুধু তাই নয় নতুন শিক্ষক
কর্মচারীদের এমপিও’র জন্য এবং উচ্চতর গ্রেডের জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে
টাকা হাতিয়ে নিতেন। আমরা প্রশাসনের নিকট ওই প্রধান শিক্ষকের দ্রুত অপসারণের
দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম বলেন, আজকের
মানববন্ধনে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার সঠিক তদন্ত করা হোক।
দোষী প্রমাণিত হলে আমার বিচার করা হবে। তাঁরা জোর করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে
মানববন্ধন করিয়েছে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন, কাজী আল
আমিন, কাজী আমিনুল ইসলাম, মো. জাকির হোসেন সরকার, সামসুল হক মাস্টার,
মো.কবির হোসেন, মহিবুর রহমান, শিক্ষকদের মধ্যে মোসা. তাসলিমা বেগম, কামরুল
ইসলাম ভূঁইয়া, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুশফিকা রহমান মিশু, মায়মুনা আক্তার ও
তানিয়া ইসলাম প্রমুখ।