প্রকাশ: রোববার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১৭ এএম আপডেট: ০৩.০৯.২০২৪ ২:১৬ এএম |
স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লার দানব খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ভস্মীভূত বিলাশবহুল বাড়িতে এখন সুনসান নীরবতা। কুমিল্লা শহরের মুন্সেফবাড়িতে অবস্থিত এ বাড়িতে ও আশে পাশেও দেখা গেছে স্তব্ধতা। বাড়ির চারপাশে কোন প্রাণীও যাচ্ছেনা। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। অথচ এই শুক্রবারে জুম্মার নামাজের পর কয়েক শত মানুষকে নতুন ৫ শ’ ও এক হাজার টাকার নোট বিলি করতেন এই পলাতক সাবেক এমপি। যেসব অর্থের বেশিরভাগই ছিল জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর কুমিল্লার হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা কুমিল্লার দানব খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বাড়ির সবকিছু ভাংচুর এবং লুটপাট করে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। বিকাল থেকে রাত অবধি সে আগুন জ্বলতে থাকে সেই বাড়িটি। যে যা পেরেছে তাই নিয়ে গেছে তার বাড়ি থেকে। বাহারের অনেক বৈধ ও অবৈধ সম্পত্তির দলিল, নগদ কয়েক কোটি টাকা, বৈধ ও অবৈধ আধুনিক ছোট বড় অস্ত্র ও গুলি সবকিছু নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। অনেকে বাড়িটি ভাংচুরের পর আনন্দে উড়িয়েছেন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা।
জানা গেছে, সাবেক এমপি বাহারের বাড়িতে অন্যান্য দলিলের সাথে তার শেষ স্বপ্নের দু’টি দলিলও ছিল। ছিলো লিবার্টি সিনেমার ৬ জন ওয়ারিশের কয়েকজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক বা আপোষে নেওয়া অ-প্রত্যাহারযোগ্য আম-মোক্তার নামা ও রেজিস্ট্রি অফিসে অস্ত্রের মুখে দলিল ঘষামাজা করে এবং লন্ডন ও কানাডায় ছুটে গিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে বানানো দলিল। ডেভেলপার সেজে শহরের মনোহরপুরের সোনালী স্কয়ারের পর ‘লিবার্টি স্কয়ার’ বানাতে চেয়েছিল সাবেক এই এমপি। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা তার সেই শেষ স্বপ্ন গুড়িয়ে দেয়। লিবার্টি সিনেমার সেই বিতর্কিত দলিল ও একটি কোম্পানীর সাথে চুক্তির দলিলের ছবি এখন মানুষের মোবাইলে মোবাইলে।
ভারতে বা সীমান্তে পালিয়ে থাকা সাবেক এই সংসদ সদস্যের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ভস্মীভূত সেই বাড়ির কলাপসিবল গেইটে তালা লাগানো। ভিতরে কিছুই নেই, সব পুড়ে ছাই। ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভবনটি । আশে পাশে নেই কেউও। সবার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক। মনে হচ্ছে সুনসান নীরবতায় ভূতুরে বাড়ি। বাহারের বাড়ির দেওয়ালে লেখা আছে ‘মুন্সেফ বাড়ির ব্লাক ড্রাগন’ অথবা ‘মনস্টার বাড়ির ব্লাক ড্রাগন’। গত দুই দিন ধরে বাড়িটিতে রাতে পাহাড়া দেন আগের নৈশ্য প্রহরী।