বল পুরাতন হওয়ার পরেই যেন কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য পেলেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। সময় নিয়ে ক্রিজে থিতু হয়েছেন। দুজনের ১০০ রানের জুটিতেই শেষ পর্যন্ত ফলো-অন এড়িয়েছে বাংলাদেশ। ঠিক টেস্ট মেজাজের না হলেও দুজনে দেখিয়েছেন এমন উইকেটে কিভাবে খেলতে হয়।
নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও একই রেকর্ডে ভাগ আছে। ২০২২ সালে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৬ রানের মাথায় ৬ উইকেট হারায় টাইগাররা। একই অবস্থা হলো রাওয়ালপিন্ডিতেও। দিনের শুরতেই খুররাম শেহজাদ আর মীর হামজার বোলিং তোপে বাংলাদেশ পথ হারায়। ত্রিশ পেরুনোর আগেই ৬ ব্যাটার ফেরেন সাজঘরে।
এরপর থেকেই পথ দেখান লিটন এবং মিরাজ। সময় নিয়েছেন। তবে একেবারে টেস্ট মেজাজে খেলেছেন এমনও বলা চলে না। সুযোগ পেলেই বাজে বলকে করেছেন সীমানাছাড়া। এদের মাঝে মিরাজই কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন। লাঞ্চের আগে বিপদ বাড়তে দেননি। আর ফিরে এসে লিটনের ব্যাটে ছিল ঝড়। তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ৮৩ বলে পেয়েছেন পঞ্চাশের দেখা।
২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা থেকে মুক্তি দিয়েছে। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। মিরাজের চারে সেই মার্ক পেরিয়ে যায় টাইগাররা। তবে দুজনে সেখানেই থামলেন না। ফলোঅন এড়ানোর জন্য দরকার ছিল ১২৫ রানের।
রান তুলেছেন দুজনে পাল্লা দিয়ে। সাবলীল ব্যাটিংয়ে সপ্তম উইকেটে ১৬৫ রানের জুটি গড়েন তারা। মিরাজ ১২৪ বলে ৭৮ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। ততক্ষণে অবশ্য একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন লিটন-মিরাজ। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ৫০ রানের কমে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর সপ্তম উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি এটা।
তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই জুটি নিয়ে লিটন বলেন, 'মিরাজকে কৃতিত্ব দিতে হবে অবশ্যই। আমার তো হাতে লাগার পর খুব একটা শট খেলতে পারছিলাম না। মিরাজ তাদের অনেকটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে শট খেলে। আমার মনে হয় মিরাজের কয়েকটা বাউন্ডারি শুরুর দিকে খেলার একটা ছন্দ তৈরি করে দিয়েছে।'
'(শুরুতে) আমি কখনওই লম্বা চিন্তাভাবনা করিনি। আমি যখন সাকিব (আল হাসান) ভাইয়ের সাথে শুরু করলাম তিনি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে গেলেন, আমি আর মিরাজ দুজনই নতুন ব্যাটার। একটাই আলোচনা চলছিল যে, খেলাটা কতখানি টানা যায়। কারণ তারা খুবই ভালো বল করছিল। নতুন বল সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। তারা একটা ভালো মোমেন্টামে ছিল। আমাদের চিন্তা ছিল আমরা কীভাবে মোমেন্টামটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।'-যোগ করেন তিনি।