বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
২ মাঘ ১৪৩১
কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার
২৪ ঘন্টায়ও ঘটনার কোন ক্লু পায় নি পুলিশ
তানভীর দিপু
প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৩০ এএম |

 কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার

কুমিল্লার হোমনায় অন্ত:সত্ত্বা মা ও ৯ বছর বয়সী শিশু সন্তানসহ একই ঘর থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের শাহ পরানের বাড়ি থেকে(৫ সেপ্টেম্বর)বৃহস্পতিবার সকালে এই মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন, বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের মো. রেজাউল করিমের মেয়ে ও দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯নবম শ্রেণীর ছাত্রী তিশা মনি (১৫), রেজাউল করিমের ফুফাতো ভাই কারাখানা শ্রমিক শাহ পরানের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী মাহমুদা বেগম (২৭) ও তার একমাত্র শিশু ছেলে শাহাব মোল্লা সাদ (৮)। তবে ঘটনার একদিন পার হলেও এই হত্যাকান্ডের কারণ বা এর সাথে কারা জড়িত এই বিষয়ে কোন তথ্য উদঘাটন করতে পারে নি পুলিশ। বৃহষ্পতিবার সকালে ঘাগুটিয়া গ্রামের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার আসফিকুজ্জামান আক্তার ও অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ। ঘটনার সর্বশেষ আপডেট জানতে পুলিশ সুপারকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায় নি। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, একাধিক তদন্তকারী দল কাজ করছে রহস্য উদঘাটনে। যে ঘরে মরদেহগুলো ছিলো সে ঘরের দরজা বন্ধ থাকলেও পাশের ঘরের দরজাটি খোলা ছিলো। এ থেকে ধারণা করা যেতে পারে ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। এছাড়া তিন জনকে কেউ একা শ^াসরোধ করে মারা কষ্টসাধ্য- ধারণা করা হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে তিশা প্রতিবেশী শাহ পরানের স্ত্রী অন্ত:সত্ত্বা মাহমুদা বেগমের সাথে রাতে প্রতিদিনের মত ঘুমাতে যায়। তারা সম্পর্কে আত্মীয় ছিলো। শাহ পরান ঢাকার একটি জুতার কারখানায় চাকুরী করতেন বলে চাচীর সাথে তিশা ও তার ছোট বোন মিম একেক দিন ঘুমাতেন।অন্যান্য দিনের মত গত ৪সেপ্টেম্বর রাতে মাহমুদা বেগমের সাথে তিশা ঘুমিয়ে ছিলেন,  সাথে মাহমুদার ছেলে শাহাব মোল্লাও সাদও ছিলো।রাতের কোন এক সময় অজ্ঞাত কারণে কে বা কারা ঘরে প্রবেশ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে একে একে ৩জনকেই শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করে থেঁতলে দেয় এবং ৩ জনের নিথর দেহ খাটের উপর ফেলে মুখের উপল বালিশ রেখে হামলাকারী পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে যাবার জন্য তিশাকে ডাকতে আসে তার ছোট বোন মিম। এসে জানালা দিয়ে খাটের উপর ৩ জনের মরদেহ দেখে চিৎকার দিয়ে বাড়িতে চলে যায় এবং পিতা রেজাউল করিমকে খবর দেয়।এরপর রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে এসে হত্যাকান্ডের ঘটনা দেখে হাউ মাউ করে কাঁদতে থাকে। এরপর মুহুর্তেই ঘটনা বাড়ির লোকজনসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও থানায় খবর দিলে হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মীর মুহসীন মাসুদ রানা ও হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এরপর ঘটনার বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে অবগত করলে পুলিশ সুপারসহ সিআইডি, ডি.বি, র‌্যাব ও পিবিআইসহ সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি শান্ত রেখে তিনটি মরদেহের সুরতাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে লাশ প্রেরণ করা হয়।
নিহত স্কুল ছাত্রী তিশা'র বাবা রেজাউল করিম সাংবাদিককে বলেন, আমি দীর্ঘদিন মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছি। আমার জানা মতে কোন শত্রু নেই। তবে কেনো কারা আমার মেয়ে ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ভাতিজাকে হত্যা করেছে জানিনা। আমি এর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। দ্রুত যেন আসামীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত মাহমুদার স্বামী শাহ পরান সাংবাদিককে জানান, আমি ঢাকায় থাকি। আমার স্ত্রী বাড়িতে থাকে।  আমি বাড়ি না থাকলে মাঝে মধ্যে আমার ভাতিজি তিশা মনি বা মিম রাতে আমার স্ত্রীর সাথে ঘরে ঘুমায়। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে খবর পাই আমার স্ত্রী, সন্তান ও ভাতিজীকে হত্যা করে খাটের উপর লাশ ফেলে গেছে। কারা করেছে জানিনা, আমি চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত অপরাধীদের আটক করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হউক।
ঘটনার বিষয়ে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও.সি) জয়নাল আবেদীন বলেন, এসপি স্যারসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ঘটনাস্থলে তদন্ত করছে। তিনটি মরদেহ সুরতহাল করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে মাথায় আঘাতের চিহৃ আছে। ধারনা করা হচ্ছে রাতের কোন এক সময়ে তাদেরকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। রহস্য উন্মোচনে পুলিশ কাজ করছে। অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পৃথক মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মীর মুহসীন মাসুদ রানা জানান, ঘটনাটি  পূর্বশত্রুতা না প্রেম ঘঠিত; এর কারন অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে। এসপি স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে এবং ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তসহ গ্রেফতারে অভিযান চলছে।













সর্বশেষ সংবাদ
পদত্যাগ করলেন টিউলিপ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী আটক
কুমিল্লায় দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা মেডিকেল ছেড়ে কোথায় গেলো শিশুটি?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে পুলিশে সোপর্দ
প্লাস্টিক জমা দিন গাছের চারা নিন
কুমিল্লায় ‘প্রেমিকের’ সাথে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই নারী
অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২