কুমিল্লায় ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা মানুষ
তানভীর দিপু:
|
এছাড়া মনোহরগঞ্জ উপজেলায়
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩ হাজার ৭শ ২০টি ঘর, এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ ১
হাজার ৩শ। চৌদ্দগ্রামে মোট ক্ষতিগ্রস্থ ৪ হাজার ৫শ, এর মধ্যে সম্পূর্ণ
ক্ষতিগ্রস্থ ১ হাজার ৪৫টি, নাঙ্গলকোটে ১১ হাজার ক্ষতিগ্রস্থ ঘরের মধ্যে
৫শটি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ আদর্শ সদরে ১৩ হাজার ৫শ’, লাকসামে ১৪ হাজার
৫০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, সদর দক্ষিণে ২ হাজার ৪ শ ৮২টি ক্ষতিগ্রস্থ ঘরের
মধ্যে ১৩২টি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪
হাজার ৮শ ১০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও
বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের
ইন্দ্রবতী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, অন্তত ১৫টি মাটির ঘর ধ্বসে গেছে বন্যার
পানিতে। কোন কোনটি মাটির সাথে মিশে গেছে। ঘরহারা হয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ও
আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছেন এসব পরিবারগুলো। ইন্দ্রবতী গ্রামের বাসিন্দা
ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাসের ঘরটি মিশে গেছে মাটির সাথে। ছেলের বউ আর দুই নাতিন
নিয়ে তিনি এখন থাকেন আত্মীয়ের বাড়িতে। ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাস জানান, আমার
ছেলে বিশ^জিত বিদেশে থাকে, কিন্তু সেখানে সে বেকার। চাইলেও এখন ঘর বানানোর
টাকা পাঠাতে পারবে না। কয় দিন আর মানুষের বাড়ি থাকা যায়।একই এলাকার কৃষক নিখিল চন্দ্র দাসের ঘরটিও ধ্বসে গেছে বন্যার পানিতে। ঘরে থাকা সবকিছুই টিনের চালার নিচে চাপা পড়েছে। তার উপর আবার অন্তত এক ফুট পলিমাটির আস্তরণ। নিখিল জানান, ছেলে মেয়ে দু’টোকে শহরে আত্মীয়ের বাড়িতে দিয়ে আসছি। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারছি না। চালা ভেঙ্গে সব বের করতে হবে। যে আয়রোজগার তা দিয়ে নতুন ঘর করা অনেক দিন সময় লাগবে। এতদিন কই থাকবো-কিভাবে থাকবো। তার স্ত্রী মঞ্জু রানী দাস জানান, আমাদেরকে কেউ সহযোগিতা না করলে উদ্বাস্তুর মত জীবন যাপন করতে হবে। ছেলে মেয়েগুলো পড়াশুনা করছে- তারদের জীবনও শেষ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আগে ঘরটা যেন ঠিক করে দেয়। বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার জানান, আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি ঘরের তালিকা তৈরী করেছি। উর্দ্ধতণ কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘরের তালিকাও পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই পুনর্বাসনের কাজ শুরু করতে পারবো। জেলা ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ আবেদ আলী জানান, আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠাচ্ছি। সরকারি ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে সকলকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। |