নিজেদের
ম্যাচের ফলাফল দেখে উরুগুয়ে এবার কিছুটা স্বস্তি পেতেই পারে। আর যাইই হোক
আর্জেন্টিনা কিংবা ব্রাজিলের মতো করে অন্তত হারের মুখ তো দেখতে হয়নি তাদের।
ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে নাহয় গোলশূন্য ড্র তাদের কপালে জুটেছে। কিন্তু
লাতিনের বাকি দুই জায়ান্ট যে নিজেদের ম্যাচে হেরেই বসে আছে। ব্রাজিল হেরেছে
নিজেদের ম্যাচে পুঁচকে প্যারাগুয়ের কাছে। আর আর্জেন্টিনার কপাল পুড়েছে
কলম্বিয়ার কাছে।
ব্রাজিলের হারের পেছনে দায় অবশ্য তাদের নিজেদেরই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেরই প্রশ্ন, এটাই কি ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজে দল?
কোচ দোরিভাল জুনিয়র বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার ঘোষণা দিয়েছেন মোটে ২৪ ঘণ্টা
আগে। আর মাঠে গিয়ে ব্রাজিল যেন নিজেদেরই কোচকে ভুল প্রমাণ করতে ব্যস্ত ছিল।
পুরো ম্যাচে প্যারাগুয়ের লো ব্লক ডিফেন্স ভাঙা হয়নি ব্রাজিলের।
অবশ্য,
কোচ দোরিভাল এও স্বীকার করেছিলেন, তার দলে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে পার্থক্য
গড়ে দেয়ার খেলোয়াড়ে ঘাটতি আছে। সে হিসেবে হয়ত কিছুটা ক্ষমা পেতেই পারেন
ভিনিসিয়ুসরা! তবে রক্ষণে দানিলো, গ্যাব্রিয়েল কিংবা মার্কিনিয়োসরা
ইউরোপিয়ান ক্লাবে দুর্দান্ত খেলেও ব্রাজিলের হলুদে কেন বিবর্ণ, সেই
প্রশ্নের উত্তরটাও হয়ত খুঁজতে চাইবেন কোচ দোরিভাল। শেষ ৫ ম্যাচে ৪ হারের
জন্য রক্ষণের ওপর দায় চাপানো যেতেই পারে।
আর্জেন্টিনার হারের
ব্যাপারটাও খুব একটা কম বিব্রতকর না। লিওনেল স্কালোনির দলের জন্য চলতি বছর
এটিই প্রথম হার। শেষবার তারা হেরেছিল গেল বছরের নভেম্বরে। সেই সঙ্গে ২০১৯
সালের কোপা আমেরিকার পর ৫ বছর ধরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার অপরাজিত
থাকার রেকর্ডেও ছেদ পড়েছে আজ। এ হারে টানা ১২ ম্যাচের অজেয় যাত্রা থামল
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কলম্বিয়ার দুটো গোলই
এসেছে ডেডবল থেকে। প্রথমে কর্ণার থেকে ওয়ান টু ওয়ান শেষ হামেস রদ্রিগেজের
ক্রস। আর সেখান থেকে ইয়েরসন মোসকেরার হেডে গোল। আর দ্বিতীয়টা হামেস
রদ্রিগেজের পেনাল্টি। স্পটকিক থেকে আর্জেন্টিনা ভুগেছে কোপা আমেরিকাতেও।
স্কালোনি এমন দূর্বলতার কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন সেটা হয়ত বড় একটা চ্যালেঞ্জ
আর্জেন্টিনার সামনে।
অবশ্য তুলনামূলক অবস্থানের বিচারে ব্রাজিলকেই
বেশি ছন্নছাড়া মনে হবে। ২০২৬ বিশ্বকাপ দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে
এই হারে টেবিলের পাঁচে নেমে গেল ব্রাজিল। এই ম্যাচসহ সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে
এটি চতুর্থ হার ব্রাজিলের। ৮ ম্যাচে তাদের অর্জন মোটে ১০ পয়েন্ট। সেইসঙ্গে
গত ম্যাচ ম্যাচে মাত্র একবারই ২ গোলের বেশি করতে পেরেছিল তারা। সেটাও কোপা
আমেরিকায় এই প্যারাগুয়ের বিপক্ষেই। কিন্তু দুই মাস না যেতেই প্যারাগুয়ে
ব্রাজিলকে ডোবাল নতুন লজ্জায়।
শেষবার ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা একই
রাতে হারের ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। কাকতালীয়ভাবে সেদিনের
রাতেও যুক্ত ছিল কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের নাম। নভেম্বরের বাছাইপর্বের ম্যাচে
উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। আর কলম্বিয়ার বিপক্ষে
ব্রাজিল সেদিন হেরে যায় ২-০ গোলের ব্যবধানে।
এই ম্যাচের পর লাতিনের
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শীর্ষেই থাকছে আর্জেন্টিনা। ৮ ম্যাচ থেকে আর্জেন্টিনার
অর্জন ১৮ পয়েন্ট। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে কলম্বিয়া। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে
তিনে নেমেছে উরুগুয়ে। ব্রাজিল নেমে গিয়েছে ইকুয়েডরের নিচে। সেলেসাওদের
অবস্থান পাঁচে। ৮ ম্যাচ থেকে তাদের অর্জন ১০ পয়েন্ট। ১১ পয়েন্ট নিয়ে চারে
আছে ইকুয়েডোর।