স্থগিত
হওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা
পাঠানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে। প্রস্তাবে জেএসসির বিষয়ভিত্তিক
প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এইচএসসির ৫০ শতাংশ যোগ করে যে নম্বর পাবে,
সেই নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষার ফল নির্ধারণ করা হবে। বৃহস্পতিবার (১২
সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রস্তাবনাটি অনুমোদন পায়নি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়
কমিটির। তবে এই ফল কবে নাগাদ প্রকাশ করা যাবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে
জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা
মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে এ কাজ শেষ করতে। অনুমোদন
পেতে দেরি হলে ফল প্রস্তুত করতেও দেরি হবে।
কবে নাগাদ এইচএসসি ও সমমান
পরীক্ষার ফল দেওয়া হতে পারে, জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির
চেয়ারম্যান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার
বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অনুমোদন
পেলে জানাতে পারবো কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’
এর আগে অধ্যাপক
তপন কুমার সরকার জানিয়েছিলেন, ‘এক মাসের মধ্যে ফল দেওয়া যাবে। আমরা একটি
প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি অনুমোদনের জন্য। প্রস্তাবটি পরিবর্তনও হতে
পারে। আমাদের প্রস্তাব অনুমোদন হলে বিষয়টি জানাবো।’
এর আগে ২০২০ সালে
করোনা অতিমারীর কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে
ফল প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই সময় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক
নম্বরের গড় করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হয়।
শিক্ষা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেসব পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল- সেসব
পরীক্ষার ক্ষেত্রেই জেএসসির বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং
এইচএসসির ৫০ শতাংশ যোগ করে যে নম্বর পাবে, সেই নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষার
ফল নির্ধারণ করার প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
এছাড়া যেসব পরীক্ষা
নেওয়া সম্ভব হয়েছে, সেব পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া
হবে। এই নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হবে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলোর সাবজেক্ট
ম্যাপিংয়ের নম্বর। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির প্রস্তাব অনুমোদন পেলে
আগামী এক মাসের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা যাবে।
এর আগে গত ৪
সেপ্টেম্বর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে জরুরি
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলে। ফল প্রস্তুত করতেই ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত,
গত ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবার
দেশে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে
সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা
স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করে
পরীক্ষার্থীরা। অপরদিকে পরীক্ষার্থীদের আরেকাংশ অটোপাস ঘোষণা না দিয়ে
সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানায়। পরে অবশিষ্ট
পরীক্ষাগুলো আর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বলা হয়, যেসব বিষয়ে পরীক্ষা
হয়নি শুধু সেগুলোর ক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং হবে।