কুমিল্লার “নবাব বাড়ী”, যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন
তৎকালিন নবাব হোচ্ছাম হায়দার যাকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন ব্রিটিশ রাজ
বা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছ থেকে নবাবী খেতাব মিলেছিল।
নবাব হোচ্চাম
হায়দারের নবাব বাড়ীটি অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজো নিজের ইতিহ্য নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে। কুমিল্লার নতুন প্রজন্ম এই বাড়ীর “ নবাবী আর চাকচিক্যের” গল্প
শুনতে হয়তো পছন্দই করবে, বাড়ীটি কতশত আনন্দ আর বেদনার সাক্ষী তা বলা একটু
মুশকিল কিন্তু বর্তমানের কিছু কথা আমি বা আমরা নতুন যুবসমাজকে বলতে চাই,
যেটা জানা তাদের একান্ত প্রয়োজন।
নবাব সাহেব পরিবার-পরিজন সবাইকে নিয়ে
বসবাস করার জন্য এ বিশাল বসত বাড়িটি তৈরী করেছিলেন।তিনি নতুন স্থাপনায় খুবই
উৎসাহি ছিলেন। যার কারণে তৎকালীন কুমিল্লা শহরের অনেক সরকারী স্থাপনা,
কলেজ, স্কুল, জায়গীর, মক্তব নবাব হোচ্চাম হায়দার উপহার স্বরুপ দান
করেছিলেন।
অনেকেই হয়ত জানেন না- কুমিল্লা ক্লাবের জন্য প্রথম বিলিয়ার্ড
টেবিলটি দান করেছিলেন নবাব পরিবারের নবাবজাদা সৈয়দ এহতেশাম হায়দার এবং
নবাবজাদা সৈয়দ ওসমান হায়দার।জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ করে বিলিয়ার্ডে কুমিল্লা
ক্লাবের অবদান প্রশংসনীয় কারণ কুমিল্লা নবাব বাড়ির সৈয়দ মনসুর হায়দার। আজো
প্রতি বছর কুমিল্লা ক্লাবে সৈয়দ মনসুর হায়দার স্মৃতি টুর্নামেন্টটি
অনুষ্ঠিত হয়।
জীবিকা ও উচ্চ শিক্ষার তাগিদে বর্তমানে এ নবাব পরিবারের
অনেকেই ঢাকা ও বিদেশে বসবাস রত। তা স্বত্বেও বাপ দাদার বাড়ীর প্রতিটি
দায়িত্ব ও কর্তব্য করতে সকলেই তৎপর।
কথায় আছে হাতি মরলেও লাখ টাকা। আজ
আমাদের হাতি ঘোরা, পাইক পেয়াদা নাই- কিন্তু নবাব পরিবারের সন্তান হিসাবে
আমাদের একটা অদৃশ্য মুকুট আছে আর সে মুকুটটির সন্মান রক্ষা করতে আমরা সকলেই
সচেতন ও সংঘবদ্ধ।
বেশ কয়েক মাস আগে আমি ও আমাদের পরিবারের অনেকেইণড়ঁ
ঃঁনব আর ঋধপব নড়ড়শ একটি ভিডিও লক্ষ্য করি যেটি আমাদের বাড়ীকে কেন্দ্র করে
করা । উপস্থাপক খুব চমৎকার ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন যে নবাব হোচ্চাম
হায়দারের বাড়ীটি জনশূন্য, বর্তমানে পরিত্যক্ত ও অবহেলিত, ইহার
রক্ষণাবেক্ষণের কেউ নাই, বাড়ীটি বিলুপ্ত প্রায়, ইত্যাদি।
উপরন্ত, উনি এ
বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করারও চেষ্টা করেছেন। আমি বা আমরা বিশ্বাস করি
ধনী-গরীব, শিক্ষিত-মূর্খ প্রত্যেকটি মানুষের ও পরিবারের একটা ইজ্জত বা
অব্রু থাকে। নবাব বাড়ী একটি সমভ্রান্ত পরিবার, এ বাড়ীর সদস্যদের একটা
সম্মান ও ইজ্জত আছে। আজো এ বাডীর আন্দরে আমাদের আত্মীয় স্বজনেরা বসবাস করে।
আমরা আজো সশরীরে বাড়ীতে নিয়মিত যাতায়ত করি।
আমাদের অনুমতি ছাড়া,
অহেতুক মানুষের দৃষ্টি আর্কষণ করার জন্য আমাদের বাড়ীকে নিয়ে এ ধরনের একটা
হৃদয়বিদারক ভিডিও করে ফেলাটা কি বাহাদুরি নাকি অপপ্রচার ?
জানা মতে ,
মিডিয়াতে কোনো কর্মাশিয়াল বা প্রচারণা করার আগে সে বিষয বস্তুর উপর রিসার্চ
করতে হয়, শহরের গণ্যমান্য বা বয়েজেষ্ঠ্য মানুষ থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে
হয় এবং সর্বোপরি সে পরিবারের মানুষের অনুমতি নিতে হয়।
তাই বলতে বাধ্য
হচ্ছি নবাব বাড়ী আমাদের, ঃযরং রং ধ ঢ়ৎরাধঃব ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু হড়ঃ ধ ঢ়ঁনষরপ
ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু. আমরা কারো দয়া, দান দাক্ষিন্য বা অনুদানে আগ্রহী না -
আলহামদুলিল্লাহ নবাব সাহেবের বংশধর আমরা , আমরাই আমাদের বাড়ীর জন্য যথেষ্ট।
দেশ
ও কুমিল্লাবাসীর সকলের অবগতির জন্য বলছি - নবাব বাড়ী আমাদের পৈত্রিক
সম্পত্তি, যার খাজনা প্রতি বছর আমরাই দিয়ে আসছি, প্রতি বছর নিয়মিতভাবে
আন্দর আর বাহির বাড়ীর জঞ্জাল পরিস্কার করাচ্ছি, মক্তব চালাচ্ছি , বাপ-চাচা,
দাদার মৃত্যুবার্ষিকী করছি, কোরান খতম করাচ্ছি- বাড়ীতে কোরবানি করছি।
সুতরাং
আমাদের সাথে কথা না বলে, ভিতরের কোনো বিষয় সম্পর্কে আবগত না হয়ে হুট করে
কেউ একজন দুঃখ বেদনায় জর্জরিত হয়ে একটা ভিডিও বানালেন তার উপর ভধপবনড়ড়শ
আরণড়ঁ ঃঁনব এ ভিডিও টি শেয়ারাও করে দিলেন ?
এভাবে মানি পরিবার ও বাড়ীর মান হানি করাটা নিতান্তই আবিবেচক ও অনুচিত।
এসব আমরা কবে বুঝবো ?