কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বার্ডের ৫৭তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলজিআরডি মন্ত্রনালয় বিষয়ক উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ জানান, সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি সোনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সমবায় বিভাগের একটি খাত সমবায় ব্যাংকটির অবস্থা খুবই নাজুক জানিয়ে উপদেষ্টা আরো বলেন,সমবায় পল্লী উন্নয়নের ই একটি অংশ। এটার বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ। সমবায় ব্যাংকের সম্পত্তি আছে, ব্যাংকটির সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে। এটা হচ্ছে সমবায়ের একটা চিত্র। অন্যান্য সমবায়ের অবস্থাও তাই। সমবায়ীরা শুধু - কমিটি কারা করবে এ নিয়ে মারামারি - মামলা মোকদ্দমা চলে। এটার মামলা গড়াতে গড়াতে সুপ্রীম কোর্টেও যায়। একটা বড় অংশ মামলা মোকদ্দমা হচ্ছে সমবায়ীদের মধ্যেই। সমবায়ের যে মূল দর্শন- আমরা সকলে মিলে কাজটা করবো, সে টা তো হচ্ছে না- কে কমিটিতে যাবে তাই হচ্ছে।তাহলে এই সমবায় কি আখতার হামিদ খান সাহেবের সমবায়! আপনার যে সমবায় নিয়ে গবেষণা করছেন- মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের এটা কি সে সমবায়? উত্তর হচ্ছে- না।
বার্ডের ওই সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিপিআরসি চেয়ারম্যান ড. হোসেইন জিল্লুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. তোফায়েল আহমেদ, বার্ডের মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন।
তবে এই ১২ হাজার ভরি স্বর্ণের খোঁজ কেন পাওয়া যাচ্ছে না এই প্রশ্নের জবাবে পরে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা জানান, সমবায় ব্যাংকে যে ১২ হাজার ভরি সোনা ছিলো তার প্রকৃত যে দাবিদার তারা মৃত্যুবরন করেছে বা প্রকৃত দাবিদার আসে নি। তৎকালীন বাজারমূল্যে সেগুলো বিক্রয় করা হয়েছিলো। সে টাকাও ব্যাংকের খাতে জমা পড়ে নি। এটা নিয়ে কখনো কোন তদন্তও হয় নি। তবে এখন যেহেতু একটি সংস্কার চলছে- দুদক বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন সমবায় ব্যাংকের বিভিন্ন সম্পত্তি ও বেদখলে চলে গেছে। যারা ব্যাংকের দায়িত্বে ছিলেন তারাই এসব বেদখল করেছে।
এদিকে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা পল্লী উন্নয়নে বিভিন্ন গবেষনা এবং দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন। দেশের সাম্প্রতিক অবস্থায় পল্লী উন্নয়নে বার্ড আরো কি কি বিষয়ে গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন - সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান অতিথিবৃন্দ।
বার্ডের পক্ষ থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা এবং গবেষকরা বর্তমানে চলমান গবেষণা কার্যক্র এবং প্রস্তাবিত বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তাঁরা পল্লী উন্নয়নে কুমিল্লা বার্ডের কার্যক্রমের সহজ সঞ্চালনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন।
সভপতির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন জানান, বার্ড তার সকল শাখায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন গ্রামীন বা পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখতে বেগবান হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বার্ডের সকল কার্যক্রম যেন সফলতার মুখ দেখে - তাই সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।