শারদীয়
দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া। দুর্গাপূজার
পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া থেকে শুরু দেবী পক্ষের। আর মহালয়া থেকে দিন গণনা শুরু
শারদীয় দুর্গোৎসবের।
মহালয়া ' শব্দটির অর্থ- মহান যে আলয় বা আশ্রয়।
‘মহালয়া' শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কারণ এই
দিনেই পিতৃপক্ষের অবসান হয় এবং অমাবস্যার অন্ধকার দূর হয়ে আলোকময়
দেবীপক্ষের শুভারম্ভ হয়। এখানে দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয় বা আশ্রয় ।
সবাই নিশ্চিত মহালয়া মানে দুর্গাপূজার দিন গোনা, মহালয়ার ৬ দিন পর মহাসপ্তমি।
ত্রেতা
যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে
সীতাকে উদ্ধারের জন্য । আসল দুর্গা পূজা হলো বসন্তে, সেটাকে বাসন্তী পূজা
বলা হয়। শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে
শারদীয় পূজা ও দেবীর অকাল-বোধন বলা হয়।
আজ বুধবার (২ অক্টোবর) এ উপলক্ষে
দিনের শুরুতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী
দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানানো হবে। দেশ-বিদেশের বাঙালি
হিন্দু সম্প্রদায় প্রতিটি পূজা মন্ডপে শ্রী শ্রী চন্ডী পাঠের মধ্য দিয়ে
শুরু করবেন মাতৃ বন্দনা। একইভাবে কুমিল্লার ৭৭৭টি পূজা মন্ডপে পালিত হবে
মহালয়ার আনুষ্ঠানিকতা।
সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম ‘মহালয়া’। ‘মহালয়া’ কথাটি এসেছে মহালয় থেকে।
সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম মহালয়। দুর্গোৎসবের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বের একটি মহালয়া। অন্য দুটি হচ্ছে বোধন ও সন্ধিপূজা।
আগামী
৯ অক্টোবর (বুধবার) ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে
দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১০ অক্টোবর
সপ্তমী, ১১অক্টোবর মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা, ১২ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৩
অক্টোবর বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে শেষ
হবে এই বর্ণিল উৎসব।
ভোরে মন্দিরগুলোতে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে
মহালয়া শুরু হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা উলু দিয়ে চণ্ডীপাঠ ও বিশেষ
পূজা-অর্চনা ও সাংস্কৃতিক নৃত্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই মহালয়া পালন করার
কথা রয়েছে। মহালয়ার স্তুতি পাঠের সাথে দেবী দুর্গার অসুর বধ নাচ ও গানের
মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয়।
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার
বরকামতা গ্রামের প্রতীতা তৈরির কারিগর সুমন পাল বলেন, প্রতিমার মাটির কাজ
শেষ। এখন সাদা রঙ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন রঙে মায়ের প্রতিমা সাজিয়ে
তোলা হবে। এখনও আরও দিন বাকি থাকায় ধীরে স্বস্তিতেই কাজ চলছে। তিনিসহ ৬ জন
মিলে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করছেন। মহালয়ার পর থেকেই
গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলবে। আশা করছেন পঞ্চমীতেই প্রতিমাগুলো মণ্ডপে
পৌঁছে দেওয়া হবে।