ইসমাইল নয়ন।।
কুমিল্লার
ব্রাহ্মণপাড়ায় বন্যা শেষ হয়ে গেলেও মানুষের দুর্ভোগ এখনো শেষ হয়নি।
উপজেলার চান্দলা টানাব্রিজ-মন্দভাগ সড়কটির ৩ কিলোমিটার মধ্যে ৩ টি স্থানে
বন্যার পানির স্রোতে ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে বন্যা পরবর্তী
সময় থেকে এখনো পর্যন্ত সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের বাকী অংশজুড়ে
কার্পেটিং ও পিচ উঠে ইটের খোয়া বেরিয়ে গেছে এবং কয়েকশ ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি
হয়েছে। এ সড়কে বর্তমানে পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য তিন স্থানে রাস্তায় উপর
বাঁশের সাঁকো তৈরি করে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সড়কের
শান্তিনগর এলাকার পশ্চিম অংশে প্রায় ৫০ ফুট, একই এলাকার পূর্ব অংশে প্রায়
১০০ ফুট এবং সড়কের দেউশ অংশে প্রায় ২০ ফুট ভেঙ্গে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলার
রামচন্দ্রপুর, শান্তিনগর, সাজঘর, দেউশ, রাহুল খাঁর, চড়ের পাথর, মন্দভাগ,
চৌব্বাস, গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি।
সড়কটি দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব গ্রামের মানুষের চলাচলে
দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়,
চাকরিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষেরা পায়ে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে যেতে হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিশু, মহিলা ও বিভিন্ন রোগীরা।
এ
ব্যাপারে চান্দলা শান্তিনগর গ্রামের অপু আহমেদ জানান, বন্যার পানির স্রোতে
এই সড়কের তিনটি স্থান ভেঙ্গে যায়। আমরা য্বুসমাজ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে
তিনটি স্থানে বাঁশের সাঁকু দিয়ে পায়ে হেটে চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু
এখন যানচলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৩ কিলোমিটার হেটে
(মিরপুর-কুমিল্লা) সড়কে এসে বিভিন্ন যানবাহনে উঠতে হয়।
মোশাররফ হোসেন
খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র ও সাজঘর উত্তরপাড় গ্রামের বাসিন্দা
শাকিব বলেন, আমার কলেজের ক্লাস শুরু হয় সকাল ১০ টায়। আমি বাড়ি থেকে ৮ টার
সময় রওনা দিয়ে বের হতে হয়। কারণ আমার প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে গাড়িতে
উঠতে হয়। এই সড়কটি অতি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত না হলে আমাদের ভোগান্তি শেষ
হবে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ সড়কটি যেন অতি দ্রুত
মেরামত করার ব্যবস্থা করা হয়।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে শশীদল ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, আমার ইউনিয়নে রাস্তাগুলো
বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা সদরের যাওয়ার একমাত্র
সড়কটি (মন্দভাগ - চান্দলা) বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে। আমার শশীদল ইউনিয়নের এ
সমস্ত সড়ক মেরামত করে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযোগী করতে প্রায় ৩ থেকে ৪
কোটি টাকা খরচ হবে বলে তিনি আরো জানান।
এ ব্যপারে এলজিইডির ব্রাহ্মণপাড়া
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, বন্যায় শশীদল ইউনিয়নের প্রায় ২০ টি
কাঁচা -পাকা সড়কের ৭০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কগুলো
মেরামত না করলে ছোট বড় গাড়ি চলাচলে ব্যহত হবে।এ নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।