দ্রব্যমূল্য দিন দিন লাগামহীন হয়ে ওঠায় ভালো নেই কুমিল্লার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে, সে অনুপাতে বাড়ছে না তাদের আয়। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জীবনযাপনে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। মাসিক আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে পারছেন না তারা।
কথা হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নন্দিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আক্তার হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, একসময় ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে সেই চাকরিটা হারান। তারপর থেকে কিছু মাস বেকার ছিলেন। পরে চাকরিবাকরি না-পেয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোনোমতে চলছিল সংসার। তবে দিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হাতের নাগাল ছাড়িয়ে যাওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে পারছেন না। এতে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
কথা হয় উপজেলার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি। সীমিত টাকা বেতন পাই। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে দিন দিনই আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পাল্লা ভারি হচ্ছে। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ৫ সদস্যদের সংসার খরচের জোগান দিতে দিতে হাঁপিয়ে উঠেছি।
সাহেব আলী (দিনমজুর) দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফ পুর ইউনিয়নের এগারগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে ৬ সদস্যের সংসার তার। প্রতিদিন হাতে কাজ থাকে না তার। বাজারে জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বাড়ায় সংসারের ঘানি টানতে কষ্ট হচ্ছে তার।
তিনি বলেন, বাজারে গেলে জিনিসপত্রের দাম শুনে মাথা ঘুরে যায়। যে টাকা নিয়ে বাজারে যাই তাতে সংসারের চাহিদা অনুযায়ী বাজার আনতে পারি না। পেটের ক্ষুধা তো এতকিছু বোঝে না। ছেলেসন্তান নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছি।
ব্রাহ্মণপাড়া পশ্চিম বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজল সরকার বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবজি সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে সবজির দাম। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও কিছুটা কমে আসবে। অযৌক্তিকভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জিনিসপত্রের দাম যেন কোনো দোকানি না বাড়ায় সে বিষয়ে আমরা তৎপর আছি।