কুমিল্লার
দেবিদ্বার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ
আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত বা কোন রকম ব্যবস্থা না নিয়ে
তাকে বদলি করা হয়েছে। ৮ অক্টেবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়
মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোঃ মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক
অফিস আদেশের মাধ্যমে ওই অভিযুক্ত পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে চাঁদপুর জেলার
কচুয়া পৌরসভায় বদলিপূর্বক পদায়ন করা হয়।
এর আগে ওই পৌর নির্বাহী
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ সরকাবের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি
প্রদর্শন করে বিনা অনুমতিতে বহিঃ বাংলাদেশ ছুটি মঞ্জুর না করিয়ে দেশের
বাইরে অবস্থান ও অনিয়ম পৌরসভার জমি ক্রয়ে অর্থসাৎ নিয়ে কয়েকটি পত্রিকায়
সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এছাড়া গত ৬ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা
আন্দোলনকারীদের পক্ষে মো. নাজমুল হাসান নাহিদ ওই কর্মকর্তার অনিয়ম ও
দূর্নীতি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে পৌর প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত
অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রশাসন ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে
তাকে বদলি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা ও এলাকাবাসী। ওই
কর্মকর্তা হাসিনার পতনের পর থেকে পলতক রয়েছেন।
পৌর অফিস ও স্থানীয়
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি দেবিদ্বারে পৌর সচিব হিসেবে
যোগদান করেন মো. ফখরুল ইসলাম। মামলা জটিলতার কারনে নির্বাচিত মেয়র না থাকায়
পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতেন উপজেলা নির্বাহী
অফিসারগণ। প্রশাসকদের সরলতা ও বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে মো. ফখরুল ইসলাম
পৌরসভায় নিজের অনুগত কর্মচারীদের মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে নিজের
একক আধিপত্য বিস্তার করেন। এরপর তিনি ওই সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় পৌরসভার
বিভিন্ন কেনাকাটায় অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, মশার ওষুধ ক্রয়,
লাইট ক্রয়, পৌরসভার আসবাবপত্র ক্রয়সহ কেনাকাটায় ভুয়া ভাউচারে বিপুল পরিমাণ
অর্থ হাতিয়ে নিতেন তিনি। এছাড়াও ২০২০ সালে পৌরসভার জন্য উপজেলার গুনাইঘর
গ্রামের বাসিন্দা নানু মিয়ার থেকে ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার মূল্যের ১৫ শতাংশ
জমি ক্রয় করে পৌরসভার ব্যাংক হিসাব থেকে ২৮লক্ষ ৩৮হাজার ৭৩৫ জমির মালেকের
একাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে ৯ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ
রয়েছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল
ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী মো. নাজমুল হাসান নাহিদ বলেন, একজন অভিযুক্ত
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত বা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে
বদলি করা হয়েছে। অভিযোগ করার পর এক মাসেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া
হয়নি এটি খুবই দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার
(ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল
ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে
মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছি, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের
নেই। তিনি সেখানেই বদলি হন না কেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ যে কোন মুহুর্তে
ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।