মহাষষ্ঠীতে
মহিষাসুর মর্দিনী দেবীর আবাহনের মধ্য দিয়ে গতকালই শুরু হয়েছে পাঁচ দিনের
শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আজ মহাসপ্তমী। এই তিথিতে মন্ত্র ও
শ্লোকের মাধ্য দিয়ে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, দেবীর চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে
প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। মৃন্ময়ী প্রতীমা তখন ভক্তের কাছে হয়ে উঠবেন
চিন্ময়ী। ধূপ, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে বাজছে শঙ্খনাদ।
মণ্ডপে মণ্ডপে উচ্চারিত হচ্ছে পুরোহিতের মন্ত্রধ্বনি। সকাল থেকেই বিভিন্ন
মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা পূজা উদযাপন করছেন।
মহাসপ্তমীতে ষোড়শ
উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে পূজা হবে দেবীর। সকালে ত্রিনয়নী দেবী
দুর্গার চক্ষুদান করা হবে। এরপর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়,
পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন ভক্তরা।
সপ্তমী পূজা
উপলক্ষে নানা রঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সী মানুষ সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে
হাজির হচ্ছেন। আজ সকাল ৭টা ৫৩ মিনিটের মধ্যে দেবীর নব পত্রিকা প্রবেশ,
স্থাপন, চক্ষুদান, মহা সপ্তম্যদি কল্পরাম্ভ ও মহাসপ্তমীর বিহিত পূজা
অনুষ্ঠিত হবে। পরে পুষ্পাঞ্জলীর মধ্য দিয়েই দেবী বন্ধনায় মনোনিবেশ করবেন
ভক্তরা।
এদিকে, গত বছরের চেয়ে এবার কুমিল্লায় কমেছে মণ্ডপের সংখ্যাও।
তারপরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেবীবন্দনায় মনোনিবেশ করেছে সনাতন
ধর্মাবলম্বীরা। এবছর কুমিল্লা জেলায় গত বছরের তুলনায় ৯৩টি পূজা মন্ডপ
কমেছে। গত বছর ২০২৩ সালে জেলায় ৮৪১টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব
অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবছর একই জেলায় ৭৪৮টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয়
উৎসব। অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সর্বোচ্চ
১৪৫টি এবং মেঘনা উপজেলায় সর্বনিম্ন ৯টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয়
দুর্গোৎসব।
এছাড়াও কুমিল্লা মহানগরীতে ৬৬টি পূজা, আদর্শ সদর উপজেলায়
২৬টি পূজা, দেবীদ্বার উপজেলায় ৮২টি, হোমনা উপজেলায় ৪৮টি, লাকসাম উপজেলায়
৩০টি প্রতীমা পূজা, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১১টি প্রতীমা পূজা, বুড়িচং
উপজেলায় ৩৬টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ৪১টি, চান্দিনা উপজেলায় ৬৫টি, চৌদ্দগ্রাম
উপজেলায় ২২টি, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, লাইমাই উপজেলায় ১৬টি, বরুড়া
উপজেলায় ৮৭টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১১টি, তিতাস উপজেলায় ১৪টি, সদর দক্ষিণ
উপজেলায় ২৮টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সহ-সভাপতি
নির্মল চন্দ্র পাল জানান, দুর্গোৎসব সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।
এই উৎসবটি সুষ্ঠু ভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসন যেভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে
আমরা সাদুবাদ জানাই। আমাদের বিশ^াসের প্রশাসের তৎপরতায় কুমিল্লা সুষ্ঠু ও
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় উৎসব।