দেশের
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর চাকরি ঝুলে গিয়েছিল টাইগার হেড কোচ চন্ডিকা
হাথুরুসিংহের। বিসিবি সভাপতি হিসেবে নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত হওয়া
ফারুক আহমেদ নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই জানিয়েছিলেন হাথুরুর বিকল্প কোচ
খোঁজার কথা। যদিও পাকিস্তান সিরিজে অবিশ্বাস্য ফল এবং পরপরই ভারতের মাটিতে
সিরিজ। সব মিলিয়ে হাথুরু অধ্যায় অনেকটা চাপা পড়ে গিয়েছিল।
তবে ভারতের
বিপক্ষে দুই ফরম্যাটের সিরিজেই ভরাডুবির পর আবারও নড়েচড়ে বসে বিসিবি। আসন্ন
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের আগেই বরখাস্ত হচ্ছেন হাথুরুসিংহে। সেই
সঙ্গে তাকে শোকজও করা হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) মিরপুর শের-ই-বাংলা
স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুকে শোকজ ও বরখাস্তের বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে লঙ্কান এই কোচের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে
অন্তর্র্বতীকালীন হেড কোচের দায়িত্ব পাচ্ছেন ফিল সিমন্স। আগামী বছরের
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত টাইগার হেড কোচের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি।
জাতীয়
দলের ক্রিকেটারের সঙ্গে অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার দায়েই মূলত হাথুরুকে
বিদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ফারুক। সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি
সভাপতি জানিয়েছেন, আইনগত কিছু বিষয় থাকায় শুরুতে তাকে শোকজ ও সাসপেন্ডের
মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তারপরেই চুক্তি বাতিলের বিষয়টি আসবে। সব মিলিয়ে তাকে
বিদায়ের বিষয়টি পাকা করে ফেলেছেন তারা।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান
কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। এটা দলের জন্য
ভালো উদাহরণ ছিল না। শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। বরখাস্ত করার আগে আমরা
তাকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস
ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স। ’
হাথুরুকে বরখাস্তের কারণ জানিয়ে ফারুক
বলেন, ‘দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে যেগুলো মেনে নেওয়া একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে
আমার কাছে খুব পীড়াদায়ক ছিল। এটা ভালো উদাহরণ ছিল না আরকি। তাই ওইদিক
বিবেচনা করে আমরা আজকে একটা শোকজ নোটিশ দিয়েছি। আপনারা জানেন এই
প্রক্রিয়াগুলো খুব একটা সহজ নয়। আইনি দিক থাকে এগুলোর।'
২০১৪ সালের জুন
থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচ
ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু সেবার তার চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১৯
বিশ্বকাপ পর্যন্ত। চুক্তি শেষের আগেই হাথুরুসিংহে অনেকটা আকস্মিকভাবে
বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। সেই সময়ে আলোচনা ওঠে, কোনও ক্রিকেটার বা বোর্ড
কর্তার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণেই হয়ত দেশ ছাড়েন তিনি। যদিও অনেক পরে
এসে জানান, শ্রীলঙ্কার কোচ হওয়ার কারণেই সেই সময়ে বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়েন
তিনি।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন শ্রীলঙ্কার
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ৩৫ হাজার ডলারে তার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে। যে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে চুক্তি শেষের আগেই বাংলাদেশ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে
এবারও।