নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে খান খননের নামে কাজ না
করেই ১৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের
তিন প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, ২০ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ
করে অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুমিল্লা
দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদের পক্ষে সংগঠনের সভাপতি এডভোকেট মুহম্মদ
আখতার হোসাইন বাদী হয়ে কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯
নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ
ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা
হলেন- কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম
সারওয়ার, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, শিবপুর গ্রামের হাজী
আবদুর রহিম, ঝাউতলার সেন্টু কন্ট্রাক্টর, তুলাতলী গ্রামের ফারুক চৌধুরী,
বারপাড়া ইউপির সেলিম চেয়ারম্যান, বাগমারা উত্তরের আবুল কাশেম চেয়ারম্যান,
ছাত্রলীগ নেতা শিবপুর গ্রামের তুহিন, হরেষপুর গ্রামের আলী আক্কাস মেম্বার,
বারপাড়ার সোহাগ, বড় ধর্মপুরের শহীদ, চন্ডিপুরের এ. কাশেম, শিবপুরের আ.
করিম, আবুল কালাম, শ্রীনিবাসের লিটন, দক্ষিণ বিজয়পুরের সুজন চন্দ্র পাল,
আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন চক্রবর্তী, ছাত্রলীগ নেতা মাধব বৈষব, সাবেক
অর্থমন্ত্রীর পিএস মিজানুর রহমান, বড় ধর্মপুরের আবুল কালাম, কুমিল্লা
মহানগর কৃষকলীগ নেতা জুনায়েদ শিকদার তপু, চৌয়ারা ইউনিয়নের সোহাগ
চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক
প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলী, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা
এলাকার মেসার্স টাই স্টোন, টমছমব্রীজ এলাকার মেসার্স পানি উন্নয়ন সংস্থা,
বুড়িচংয়ের পূর্বহুড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, মেসার্স হেলালশাহ এন্টারপ্রাইজ,
কংশনগর এলাকার মেসার্স খান এন্ড ব্রাদার্স, সদর দক্ষিণ উপজেলার মধ্যম
আশ্রাফপুরের আমানত উল্লাহ, শ্রীবল্লভপুরের মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ,
শাকতলার মেসার্স নীহা কন্সট্রাকশন, সোনাইছড়ি পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠনের
মেসার্স শহিদ আহমেদ বাবুল এবং মোঃ খোরশেদ আলম, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের মোঃ
ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স, ঢাকার মতিঝিলের মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স, ফেনীর
এসএসকে রোড এলাকার মেসার্স সালেহ আহমেদ, পটুয়াখালী সদর এলাকার মেসার্স আবুল
কালাম আজাদ, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মেসার্স মাসুক এন্টারপ্রাইজ,
নির্মাতা কৌশলী ফরকপুর, বেড়ামারা, কুষ্টিয়া, চট্টগ্রামের চশবাজারের মেসার্স
গরীবেনেওয়াজ, কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের মেসার্স চৌধুরী ট্রেডার্স, খুলনার
মেসার্স আমিন এন্ড কোং, কুমিল্লার জজকোর্ট রোড এলাকার মেসাস মজিবুর রহমান,
পটুয়াখালীর মেসার্স আল মামুন এন্টারপ্রাইজ, সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর
মুড়াপাড়ার আলামিন রাব্বি, মোঃ বাপ্পি এবং আবুল হাশেমসহ অপ্সাতনামা ২০/২৫
জন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়- ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত
পর্যন্ত কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও নাঙ্গলকোট এলাকা, সদর এলাকায় মোট ৪২টি খাল
খননের জন্য ১৯,৬৮,৩০,০০০/- (ঊনিশ কোটি আটষট্টি লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা
বরাদ্দ করা হয়। মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে খাল খনন না করিয়া
১৯,৬৮,৩০,০০০/- (ঊনিশ কোটি আটষট্টি লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা আত্মসাৎ করেন।
খাল খনন না করায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা, কুমিল্লা সদর উপজেলা,
নাঙ্গলকোট উপজেলা এলাকায় ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বিগত ১৫ বছর
যাবৎ বাদী ও স্বাক্ষীগণ সহ অত্র অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার কৃষক রোপা আমন ধান
চাষ করতে পারে নাই এবং অন্যান্য শাকসবজি ও রবিশস্য বপন করাইতে পারে নাই।
ফলে আমন ধান ও রবি শস্য উৎপাদন ব্যাহত হইয়া বাদী ও স্বাক্ষীগণ অত্র অঞ্চলের
কৃষকগণের প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হইয়াছে।
মামলার বাদী কুমিল্লা
দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদের পক্ষে সংগঠনের সভাপতি এডভোকেট মুহম্মদ
আখতার হোসাইন বলেন, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে তদন্তের জন্য পিবিআইকে
নির্দেশ দিয়েছেন।