শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪
২ কার্তিক ১৪৩১
কাঁচাবাজার ও শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরী
অধ্যাপক ডা: মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১:১৯ এএম |


 কাঁচাবাজার ও শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরী
বন্যার প্রভাব বইছে সারাদেশে। প্রায় কাঁচামাল থেকে সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে ফার্মের ডিম ও মুরগির দাম, কাঁচাবাজার ঘুরলে আৎকে উঠতে হয়। বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া করল্লা ১০০ টাকা, ৬০ টাকা থেকে বেড়ে টেরস ৮০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, লাউ ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, পটল ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কাকরোল ৩০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, পেপে ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের আটি মিলছে না ২০ টাকার নীচে। পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১০০ টাকা থেকে ১২৫ টাকা ও রসুন ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, বাজারে রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৮০০ টাকা কেজি, পাবদা ৪০০ টাকা, কৈ ৪৫০ টাকা, পাংগাস ২০০-২২০ টাকা, মৃগেল ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, রুই ৩০০-৪০০ টাকা ও কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাংশের দামও কিছুটা বেড়েছে যেমন গরুর মাংশ ৮৫০ থেকে ১ হাজার এবং ছাগলের মাংশ ১ হাজার থেকে ১১শ টাকায় বিক্রি হয়। মুরগীর ডিম ১৮০ টাকায় ডজন বিক্রি হচ্ছে।
দেশের উন্নয়নে এখন বড় প্রতিবন্ধক হিসাবে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যয় বেড়েছে। নিত্যপন্যের মূল্যের উর্ধ্বগতি নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের  জীবনে বেশ চাপ সৃষ্টি করেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও বেশী উদ্যোগী হতে হবে। বাজারের সঠিক অবস্থার খবর নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বাজার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সরকারের যেসব বিভাগ জড়িত তাদের কার্যক্রমে জনমনে অনেক প্রশ্নের উদয় হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট যেন বাজারকে অস্থির করতে না পারে সেদিকে কড়া নজর দিতে হবে। আমদানি ঠিক রেখে সাপ্লাই চেইন সচল রাখার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ইতিমধ্যে বাজারে স্বস্তি আনতে নানাহ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে সেগুলো বাস্তবায়নে দুর্নীতির  আশ্রয় নিলে হবে না। নীতি-নৈতিকতা, জবাবদিহি ও জনসেবামূলক ভূমিকা দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বিশেষ সুবিধা রাখতে পারে। মূল্যস্ফীতি এখন বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা। বাজারে জিনিষপত্রের মুল্য লাগামছাড়া, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য জিনিসপত্রের দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে, তাদের পক্ষে দুবেলা অন্নের যোগাড় কঠিন। ইলিশ মাছ ও গরুর মাংশ দুরে থাক ভাল মানের সব্জিও কিনতে পারছে না। 
গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার একটি গণতান্ত্রিক, শোষনমুক্ত, বৈষম্যহীন দেশ গড়ার লক্ষে দেশের নিপীড়িত শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে দেশবাসীর প্রত্যাশা। মালিকরা অর্থের দাপটে রাষ্ট্র ও সমাজের একচেটিয়া ক্ষমতার কর্তা ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত শ্রমিকদের উপর নির্যাতন-দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে। বিজিএমইএ সচেতন শ্রমিকদের অধিকার সচেতনার কারনে অনেক ক্ষেত্রে কর্ম করতে দিচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে কারখানায় মালিকদের মধ্যকার দন্ধকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের উস্কানী দিচ্ছে, নির্যাতনের শিকার বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা যাতে আন্দোলন করতে না পারে সেজন্য পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, পূর্বের ক্ষমাশীনরা ও পূর্বের ক্ষমতাশীল দলের রাজনীতিবিদদের মালিকানাধীন কারখানায় বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা চরম সংকটে পড়েছে। লীজ বাতিল করে বন্ধকৃত সকল পাটকল রাষ্ট্যীয়ভাবে চালু, আধুনিকায়নসহ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার দাবিতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ শুন্য।
এটা সবাইকে মনে রাখা দরকার যে ঐ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠী বিজয়ী হয়নি। ছাত্র জনগণ রক্তপাত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়ে দেশবাসী আশা করেছিল যে, ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও অতীত দিনের মত দখলদরিত্ব, চাঁদাবাজী বন্ধ হবে- কিন্তু তা হয়নি। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ উন্নতি এখন পর্যন্ত হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাল্টা দখলদারিত্ব, নীরব চাঁদাবাজি, হুমকি ধমকি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় সৃষ্ট সংকটে ক্ষিপ্রতার সাথে সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনাসহ এসময়ে ও অতীতে যেসব বাজার সিন্ডিকেট ও দখলদারিত্ব কায়েম হয়েছে তার অবসান ঘটাতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রতি সকল দেশবাসীর আহ্বান। ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে সরকার ও মালিকরা একটি উৎপাদনমূখী শিল্প ব্যবস্থা কায়েমে সবাই আশাবাদী। অন্তবর্তীকালীন সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও দখলদারিত্ব বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সকল নাগরিকগণ আশা করলেও তার উল্লেখযোগ্য প্রতিফলন এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ













সর্বশেষ সংবাদ
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধে বিপর্যস্ত জনজীবন
ডেভেলপমেন্ট ফর সোসাইটি’র উদ্যোগে দুস্থ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে গাভী বিতরণ
এইচএসসিতে শশীদল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের কলেজের শতভাগ সাফল্য
শমসের মবিন চৌধুরী আটক
৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, কুমিল্লা জুড়ে গ্রাহকদের ভোগান্তি
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন
আমাকে নিয়ে খেলবেন না, ভিডিও বার্তায় সাকিব
কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন কুমার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২