শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪
২ কার্তিক ১৪৩১
জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে রাষ্ট্রের করণীয়
এম শামসুল আলম
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫৩ এএম |

 জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে রাষ্ট্রের করণীয়
চাহিদামতো জ্বালানি সরবরাহ থাকা ও পাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। অবশ্য অনেকেই তা জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকার করতে চান না। কারণ, জ্বালানি প্রাপ্তি সরাসরি মানুষের মৌলিক অধিকার (অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান) নয়। যদিও জ্বালানি মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত এবং জ্বালানি মানুষের প্রত্যক্ষ মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিতকরণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিটি উৎপাদন ও সেবা কার্যক্রমে জ্বালানি অপরিহার্য। বিদ্যমান জ্বালানিসংকটে জীবনযাত্রা ভীষণভাবে বিপর্যস্ত। জ্বালানির অভাবে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান সুবিধা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তাতে মানুষের জীবনও কখনো কখনো বিপন্ন হয়। তাই জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণ করার দায় রাষ্ট্রের। 
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভূমি ও সাগরের অন্তস্থ সব জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের মালিক প্রজাতন্ত্র তথা রাষ্ট্র। 
৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। অতএব মালিকানা সূত্রে যেসব সম্পদের ওপর জনগণের অধিকার রয়েছে, জ্বালানি সম্পদের অধিকার তার অন্যতম। ১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জ্বালানি উৎপাদন যন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা এবং বণ্টন প্রণালিগুলোর মালিক হবে জনগণ। সে উদ্দেশ্যে সরকারি খাতগুলো সৃষ্টি করা হবে এবং বণ্টনে ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমতা নিশ্চিত করা হবে। ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জ্বালানি তথা জাতীয় সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সব নাগরিকের। এ সম্পদ রক্ষায় ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যেকোনো নাগরিক সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হতে পারবেন। তা ছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তার অভাবে যদি জীবন বিপন্ন বা হুমকির সম্মুখীন হয়, তাহলে সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকার খর্ব হয়েছে বলে গণ্য হবে। 
যেহেতু জ্বালানি ও জ্বালানিজাত পণ্য এবং এর উৎপাদনযন্ত্র, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণ ও বণ্টন প্রণালিগুলোর মালিক জনগণ, সেহেতু জ্বালানি অনুসন্ধান এবং জ্বালানি ও জ্বালানিজাত পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ ও বণ্টন এবং এসবের উন্নয়ন জনগণের কর্তৃত্বে নিশ্চিত হতে হবে। তাহলে জনগণের সস্তায় মানসম্মত জ্বালানি প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। তাতে জ্বালানির ওপর সাধারণ জনগণের স্বত্বাধিকার অর্জন সহজ হয় এবং সরকার সহজেই জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারে। 
সংবিধানে রাষ্ট্র সামাজিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদ: ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন।’ এবং ১৯(২) অনুচ্ছেদ: ‘মানুষে মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম ও সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ 
দেশের সীমিত জ্বালানি সম্পদ সংবিধান সম্মতভাবে উন্নয়ন, বিতরণ ও বণ্টন এবং বিপুল মানবসম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার ১৯৯৬ সালে প্রথম জ্বালানি নীতি গ্রহণ করে। কিন্তু তা কার্যকর করার জন্য কোনো কর্মপরিকল্পনা গৃহীত না হওয়ায় এ নীতিমালার সময়োপযোগী সংশোধন ও পরিবর্তন সম্পর্কে বাস্তব কোনো ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়নি। অতঃপর ২০০৪ সালে জ্বালানি নীতি (সংশোধিত) চূড়ান্ত করা হয়। তবে এ সংশোধিত নীতিমালাটি সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়নি। ১৯৯৬ সালের ওই নীতিমালায় ঘোষিত উদ্দেশ্যগুলো ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিরাজমান বাস্তবতায় বিশ্লেষণ করা আজ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। তাতে দেখা যায়-
উদ্দেশ্য-১: ‘অঞ্চলভিত্তিক আর্থসামাজিক শ্রেণিভেদে জ্বালানি চাহিদা পূরণ।’ বাস্তবতা হলো- এটি এখনো সরকারের একটি ‘উইশফুল থিংকিং’ হিসেবে রয়ে গেছে। জ্বালানি চাহিদার অংশবিশেষ অসমভাবে পূরণ করা হয়। শহর ও গ্রামে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বণ্টনে বৈষম্য। সরকারি ও বেসরকারি এবং পিডিবি ও সরকারি কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি বণ্টনে বৈষম্য। ভোক্তা শ্রেণিভেদে ট্যারিফ নির্ধারণে বৈষম্য। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীর ঋণ বণ্টনে বৈষম্য। সর্বোপরি জ্বালানি চাহিদা পূরণের কৌশল সমতাভিত্তিক নয়।
উদ্দেশ্য ২: ‘উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেন জ্বালানিস্বল্পতার কারণে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য টেকসই আর্থিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে যথাযথ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।’ বাস্তবতা হলো, জ্বালানিস্বল্পতার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত। জ্বালানি সরবরাহ সংকট চরমে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণহীন। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ব্যাহত। জ্বালানি নিরাপত্তা অনিশ্চিত। আর্থিক প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। জ্বালানি বিতরণ ও বণ্টনে গ্রামাঞ্চল বৈষম্যের শিকার।
উদ্দেশ্য ৩: ‘নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন ও যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।’ বাস্তবতা হলো, নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি উপেক্ষিত। নিজস্ব জ্বালানি গ্যাস ও কয়লা রপ্তানির প্রচেষ্টা, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি বৃদ্ধি এবং কুইক রেন্টাল ও আদানি ধাঁচের বিদ্যুৎ প্রকল্পই তার প্রমাণ। 
উদ্দেশ্য ৪: ‘ইউটিলিটিগুলোর টেকসই পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।’ বাস্তবতা হলো, ইউটিলিটিগুলো দক্ষ জনবল ও সুশাসন সংকটে। পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা ভয়াবহ স্বার্থ সংঘাতের শিকার। ইউটিলিটির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো প্রতিকার হয় না। ফলে ইউটিলিটিগুলোর টেকসই পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা অনিশ্চিত।
উদ্দেশ্য ৫: ‘পরিবেশবান্ধব টেকসই জ্বালানি উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা।’ বাস্তবতা হলো, এটি মূলত আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ। পরিবেশ সংরক্ষণে মাতারবাড়ী ও পায়রা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রশ্নবিদ্ধ। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এনভায়রনমেন্টালি ক্রিটিক্যাল এরিয়ার মধ্যে স্থাপিত এবং সুন্দরবন বিপন্ন। ফুলবাড়ী উন্মুক্ত খনি উন্নয়ন প্রকল্প এবং দুর্ঘটনা কবলিত মাগুরছড়া ও ছাতক গ্যাস ফিল্ড উন্নয়ন প্রকল্প দুটির পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর তথা সরকারের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ।
উদ্দেশ্য ৬: ‘জ্বালানি খাত ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।’ বাস্তবতা হলো, বেসরকারি বা ব্যক্তি খাতের অংশগ্রহণ মূলত লুণ্ঠনমূলক। তারা জ্বালানি সম্পদ জনগণের নামে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য ও সমর্থনে লেনদেন করে থাকেন এবং জনগণের অধিকার খর্ব করে কতিপয়ের দুর্ভেদ্য অধিকার বা অলিগার্ক সৃষ্টি করেন। সরকারি খাত মনোপলির শিকার। রেগুলেটরি সিস্টেম অকার্যকর।
জ্বালানি সরবরাহ ব্যয় ও মূল্যহার লুণ্ঠনমূলক। আবার সরকারি খাতের অংশগ্রহণও লুণ্ঠনমূলক। অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে জ্বালানি খাত ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন লুণ্ঠনযজ্ঞের শিকার। 
১৯৯৬ সালের জ্বালানি নীতির প্রতি রাষ্ট্রীয় উপেক্ষা, এর বাস্তবায়ন রহিত করে এবং নীতিটি একটি কাগুজে দলিলে পরিণত হয়। আসলে চলমান জ্বালানি রূপান্তর নীতি ও আদর্শহীন এবং জনস্বার্থ ও অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ ন্যায় ও নীতিবহির্ভূতভাবে সব যুক্তিযুক্ত আপত্তি উপেক্ষা ও জনগণের জ্বালানি অধিকার হরণ করে জ্বালানিসংকট মোকাবিলা করার দোহাই দিয়ে সরকার বছরের পর বছর আইনটি সক্রিয় রাখে। ফলে জ্বালানি বাজার প্রতিযোগিতাবিহীন হওয়ায় একচেটিয়াত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। 
সর্বোপরি সরকার গণ-শোষণ প্রতিষ্ঠিত করে, রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সম্পদ অরক্ষিত রেখে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থাকে বিকৃত করে লুণ্ঠন অব্যাহত রাখতে এ আইনকে একটি সনদে পরিণত করে। সংবিধান, মানবাধিকার, জ্বালানি অধিকার, ভোক্তা অধিকার, সামাজিক ন্যায্যতা ইত্যাদি এ আইনের কাছে তুচ্ছ ও তাচ্ছিল্যের বিষয়। এ আইন সরকারের কাছে এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ কখন হয়, যখন সরকার গণশত্রুতে পরিণত হয় এবং জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণ করার দায় ও দায়িত্ববোধ সরকারের মধ্যে লোপ পায়। বর্তমান সরকার এ আইন স্থগিত করেছে।
 ফলে আগামীতে এ আইনের ব্যবহার রহিত হলেও এ আইনের আওতায় কৃত কার্যক্রম বহাল থাকল। ফলে জনগণ লুণ্ঠনমুক্ত হলো না। সরকার জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে যথাযথ দায়িত্ব পালনে সফল হলো না। ফলে আইনটি বাতিল হতেই হবে। রাষ্ট্রের রূপান্তর ঘটেছে, এ কাজটিও ঘটবে। কোনো আদর্শিক সরকার দায়িত্ব পালনে বিরত থেকে জনগণের জ্বালানি অধিকার খর্ব হতে দিতে পারে না।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি (সংশোধিত) ২০২৪-এ বলা হয়েছে, ২০১০-এর ওই বিতর্কিত আইনের ক্রমান্বয়ে কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে ‘চলমান রূপান্তরে জ্বালানি উন্নয়ন ব্যয়হার অন্যায় ও অযৌক্তিক এবং সামঞ্জস্যহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোক্তা লুণ্ঠনমূলক মূল্যহারে বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণকারী সংস্থাসমূহ নিষ্ক্রিয়। ফলে জ্বালানি অধিকার খর্ব হওয়ায় ভোক্তা জ্বালানি সুবিচার বঞ্চিত।’ চলমান জ্বালানি রূপান্তরে ক্রমবর্ধমান আমদানি-নির্ভরতার খেসারত একই সঙ্গে রাষ্ট্র ও ভোক্তা উভয়কেই দিতে হচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় যুগপৎ ভর্তুকি ও মূল্যহার উভয় বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বাজেটে ভর্তুকি বরাদ্দ ছিল গত অর্থবছরে গ্যাসে ৬ হাজার কোটি টাকা, এবারে ৭ হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মূল্যহার বৃদ্ধি হয়েছে একাধিকবার। এবারে বাজেটে বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। গতবার ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে তা ৫০ হাজার কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। 
বিগত সরকার জ্বালানিসংকট নিরসনের লক্ষ্যে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগে বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে, যা চাহিদা ও জ্বালানি সরবরাহ সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এবং অত্যধিক। ফলে উৎপাদনক্ষমতা অনেকাংশে অব্যবহৃত থাকে বলে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় ভর্তুকি ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন। সরকারের এমন কৃতকর্ম জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণ নয়, সরকারের লুণ্ঠনমূলক দর্শনই এ খাত উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক। ফলে সরকার এ খাতে কল্যাণ নয়, লুণ্ঠনে নিয়োজিত। বর্তমান সরকার এ খাতে লুণ্ঠন নয়, কল্যাণে নিয়োজিত, তা প্রমাণ করায় তার জন্য এখন রাষ্ট্র একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আমাদের মতো দরিদ্র দেশে জ্বালানি পণ্য বা সেবা বাণিজ্যিক হতে পারে না। এটি জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং এর প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকার দায়বদ্ধ। সরকার শতভাগ মানুষের বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি করে। তারা এ সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আড়ম্বরের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইস্যুটি উদযাপন করে। তাদের এ দাবি মূল্যহার ও ভর্তুকি এবং লোডশেডিং বৃদ্ধি দ্বারা সমৃদ্ধ, বিদ্যুৎ জোগান ও প্রাপ্তি নিশ্চিত দ্বারা নয়। জনগণের জন্য লুণ্ঠনমুক্ত মুনাফাবিহীন সরকারি জ্বালানি সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করা বর্তমান সরকারের জন্য এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আশা করা যায়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও জ্বালানি আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মতো এমন কোনো পরিস্থিতি ওই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার জন্য কোনো বাধা হবে না। তবে তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি ব্যয় নিম্নতর পর্যায়ে হলেও সরকার এখন চরম ডলারসংকট ও মুদ্রাস্ফীতির শিকার। অর্থাৎ সরকারের আর্থিক সামর্থ্য এখন চরম সংকটে থাকায় জনগণের জ্বালানি অধিকার যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি বিপন্ন। 
অতএব জনগণের জ্বালানি অধিকার সুরক্ষায় যেন জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হয় এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সফল করার মতো জাতীয় সক্ষমতা অর্জিত হয়, সে জন্য জনবান্ধব জ্বালানি রূপান্তর নীতি গ্রহণ অপরিহার্য। বিষয়টি তখনই সরকারের বিবেচনায় আসবে, যখন সেটি জনগণ তথা ভোক্তা সাধারণের দাবি হিসেবে তা সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
লেখক: ডিন, প্রকৌশল অনুষদ, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব














সর্বশেষ সংবাদ
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধে বিপর্যস্ত জনজীবন
ডেভেলপমেন্ট ফর সোসাইটি’র উদ্যোগে দুস্থ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে গাভী বিতরণ
এইচএসসিতে শশীদল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের কলেজের শতভাগ সাফল্য
শমসের মবিন চৌধুরী আটক
৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, কুমিল্লা জুড়ে গ্রাহকদের ভোগান্তি
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন
আমাকে নিয়ে খেলবেন না, ভিডিও বার্তায় সাকিব
কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন কুমার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২