কাইল ভেরেইনে যেন বাংলাদেশকে দেখালেন নিজেদের চেনা ডেরায় কীভাবে ব্যাটিং করতে হয়। যে পিচে বাংলাদেশের পুরো দল মিলেই করেছে ১০৬ রান। এমনকি নিজের দলের অর্ধেক ব্যাটারই ফিরেছেন গতকাল এক সেশনে, সেখানে কাইল ভেরেইনে করলেন দুর্দান্ত এক শতক। ১৩৪ বলে তুলে নিয়েছেন নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। তার এমন সেঞ্চুরির সুবাদেই বড় লিডের পথে আছে দক্ষিণ আফ্রিকাও।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে তুলেছে ২৯২ রান। দলের লিড ১৮৬। মিরপুরের মন্থর উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা আপাতত নিজেদের খানিক নিরাপদ ভাবতেই পারে। তবে বাংলাদেশ স্বস্তি পেতে পারে নবম উইকেট তুলে নিয়ে। ১৪ ওভার পর এসে উইকেট পেলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সাজঘরে পাঠিয়েছেন ডিন পিটকে।
সেঞ্চুরির পর দুটো ছয় হাঁকিয়েছেন ভেরেইনে। আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটার। তাতে খুব বেশি না পারলেও লিডকে ঠিকই টেনে নিয়ে গেলেন ২০০ এর ওপারে। দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ব্যাটার হিসেবে তাকে সাজঘরে ফেরালেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ২০২ রানে এগিয়ে থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মিরপুর টেস্টের লাগামটাও কার্যত নিজেদের হাতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সকালে বাংলাদেশের শুরুটাই ছিল হতাশার। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার কাইল ভেরেইনে আর উইয়ান মুল্ডার করেছিলেন ভালো শুরু। পিচের মেজাজ বুঝেছেন, এরপর তাইজুল-নাইমদের বল বুঝে এগিয়েছেন। অবশ্য বাংলাদেশের বোলাররা খুব বেশি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েও দিতে পারেনি সেই অর্থে। সাদামাটা বোলিং করেছেন পুরোটা সময় জুড়ে।
৭ম উইকেটে লম্বা জুটি গড়ার পথে দুজনেই পেয়েছেন ফিফটি। অবশ্য তাতে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের খানিক অবদানও আছে। আর দুজনের জুটি ছিল ১১৯ রানের। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে এটিই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ ৮০ রানের জুটিতেও ছিলেন মুল্ডার। ২০২২ সালে পোর্ট এলিজাবেথে কেশব মহারাজকে নিয়ে সেই জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মুল্ডার আর কেশব মহারাজকে পরপর দুই বলে ফেরান হাসান মাহমুদ। মুল্ডার ক্যাচ দিয়েছিলেন স্লিপে। আর কেশব মহারাজ ফেরেন ইনসুইং ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড হয়ে। লাঞ্চের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের সাফল্য এই দুই বলই। এরপরে আরও এক লম্বা জুটির যন্ত্রণা সইতে হয়েছে শান্তর দলকে।
কাইল ভেরেইনের পরের ম্যারাথন জুটি ডিন পিটের সঙ্গে। ১৩০ বলে ৬৬ রানের জুটি দুজনের। ডিনকে ফেরানোর একটু আগেই অবশ্য সেঞ্চুরি পেয়েছেন ভেরেইনে। দক্ষিণ আফ্রিকার লিড বাড়িয়ে নিয়েছে অনেকটা দূর পর্যন্ত। কাগিসো রাবাদা ক্রিজে আসার পরেই আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন ভেরেইনে। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ১১৪ রানে হয়েছেন আউট।
বাংলাদেশের হয়ে ৫ উইকেট তাইজুল ইসলামের। ৩ উইকেট হাসান মাহমুদের। আর শেষ উইকেট তুলে নেন মেহেদি হাসান মিরাজ।