গত
৪ আগস্ট কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন আহত আবু বকর কুমিল্লা
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছেন। দেবিদ্বার
নিউমার্কেটের সামনে দুবৃর্ত্তের হামলায় প্রায় শতাধিক আন্দোলনকারী পঙ্গুত্ব
বরণ করে জীবনযাপন করছে। কিন্তু আহত আবু বকর বর্তমান মানসিক সুস্থতা না
থাকায় কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মোঃ তারেক মুন্সীর আহ্বানে
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পরবর্তী চিকিৎসা ও সুস্থতার
সার্বিক দায়িত্ব গ্রহণ করে। গতকাল ২৯ অক্টোবর ইএমসিএইচ এ ভর্তি হলে কলেজের
প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শাহ্ মোঃ সেলিম, কলেজ
অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ রুহিনী কুমার দাস, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জাকিরুল
ইসলাম ভর্তিকৃত আবু বকর এর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও অভিভাবকদের যথাযথ সকল
চিকিৎসা সেবায় সার্বিক সহযোগিতা ও দায়িত্ব গ্রহণের আশ^াস দেন এবং তার আশু
রোগমুক্তি কামনা করেন। ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের
প্রথম থেকেই অদ্যাবধি সকল আহতদের বিনামূল্যে সু-চিকিৎসার প্রদান করে
আসছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগষ্ট জাফরগঞ্জ কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র
আবু বকর দেবিদ্বার সন্ত্রাসীদের হামলায় মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রামদা
ও লাঠিসোটার আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে কাবিলাস্থ্য ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে
নিউরো সার্জারী বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে
তৎকালীন সময়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রাণাধীনে থাকায় নিরাপত্তার জন্য
চট্টগ্রাম চলে যেতে বাধ্য হয়।
পরবর্তীতে স্বৈরাচার সরকারের পতনের ৯ দিন
পর ১১ আগষ্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে স্থানান্তরিত হয়ে
কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হন। ট্রমা সেন্টারে ৫ দিন চিকিৎসাধীন
অবস্থায় তাকে দেখতে স্থানীয় বৈসম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দ, সচেতন রাজনৈতিক
ফোরাম, কুমিল্লার প্রধান সমন্বয়ক ড. শাহ্ মোঃ সেলিম, শেখ আব্দুল মান্নানসহ
অনেকেই তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখেন ও চিকিৎসা সেবায় সার্বিক সহযোগিতা
করেন। একইভাবে কুমিল্লার স্থানীয় জেলা প্রশাসন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ,
মহানগর ও সদর উত্তর জেলা বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দও তার
চিকিৎসার বিষয়েও সার্বিক খোঁজখবর নেন ও সহযোগিতা করেন। পরবর্তীতে আহত
ছাত্র আবু বকরের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৬ আগষ্ট জাতীয় নিউরো সায়েন্স
হাসপাতাল, ঢাকা নিউরো সার্জারী বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। তার মাথায় রামদার
কোপে প্রায় ৪৮টি সেলাই সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ইনজুরি আজও বিদ্যমান।
গত
১৮ আগষ্ট প্রফেসর ডাঃ দীন মোহাম্মদ ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মাহফুজুল হকের
তত্ত্বাবধানে তার নিউরো সার্জারী অপারেশন সম্পন্ন হয়। অপারেশন পূর্বে তার
মাথার খুলি আলাদা করে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে সংরক্ষণের
জন্য রাখা হয়। দীর্ঘদিন প্রায় উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত
২৭ অক্টোবর তাকে উক্ত হাসপাতাল হতে রিলিজ দেওয়া হয়। বর্তমানে আবু বকর
কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছেন।