কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর ইউ.এম.এ উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে হিস্টোরিয়া রোগে অন্তত ১৫জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার
(২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। তাঁরা সবাই
ওই স্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আটজনকে
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। এতে অন্যান্য
শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে শ্রেণীকক্ষে ছাত্রীদের
কান্নার রোল পরে যায়।গুরুতর অসুস্থরা হলেন, বড়শালঘর ইউ.এম.এ উচ্চ
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহি ইসলাম, স্বপ্না আক্তার, মীম
আক্তার, মহিমা আক্তার, ইসরাত জাহান, সিফাত আক্তার, নুরে জান্নাত ও জান্নাত
আক্তার।
ইসরাত, মীম, নুসরাত জানায়, গত মাসে নবম শ্রেণীর তিন
শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি পাঠানো
হয়। পরে তাদের তিন জনের মধ্যে আজকে দুজন ক্লাসে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে
শ্রেণী কক্ষে ক্লাস চলাকালে এক শিক্ষার্থী বেহুশ হয়ে ঢলে পড়ে। তাকে ধরাধরি
করে মাথায় পানি দেওয়ার সময় পর পর আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী মাথা গুড়িয়ে হেলে
পড়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষার্থী আরও জানায়, শ^াস বন্ধ হয়ে আসছে, হাত পা
অবস হয়ে আসে, শরীর ঝিমুনি দিয়ে আসে।
সবুজ মৈশান নামে একজন অভিভাবক
বলেন, আমার মেয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ে। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে
আসি। আমি স্কুলের সভাপতিসহ কয়েকজনকে কল দিয়েছিলাম তারা কল রিসিভ করেনি। এই
ক্লাসে আরও কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাঁরা ক্লাস বন্ধ করেনি, আমি
থানায় গিয়ে অভিযোগ দেব।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মজিবুর রহমান
বলেন, কয়েকজন ছাত্রী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করি। এরমধ্যে আরও কয়েকজন
শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যায়। পরে তাদের সকলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ভর্তি করা হয়েছে। এরপর ওই ক্লাসটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
দেবিদ্বার
উপজেলা স্বাস্থা ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান বলেন, মাস
হিস্টিরিয়া সংক্রামক রোগের মত দ্রুত ছড়ায়। তবে এটি মানসিক অবসাদ থেকে হয়।
কেউ একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দেখাদেখি অন্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটাতে
শারীরিক কোন সমস্যা আমরা খুঁজে পাইনি, ভয় পাওয়ার বা আতঙ্ক হওয়ারও কিছু নেই।
এটা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলায় হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে এ রোগে
আক্রান্ত হয়েছে। যে সকল শিক্ষার্থীরা গুরুতর অসুস্থ হয়েছে তাদের অক্সিজেন
দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার
ইউএনও নিগার সুলতানা বলেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য
বলা হয়েছে। আশা করছি তারা তারাতারি সুস্থ হয়ে যাবে।