১০
হাজার ৫৩০ টি হাজার প্যাডেল রিক্সার লাইসেন্স থাকলেও কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনে চলছে অন্তত ৪০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিক্সা, অটোরিক্সা,
ইজিবাইক। তবে সড়ক থেকে অনেক আগেই উঠে গেছে প্যাডেল চালিত রিক্সা। যে কারনে
লাইসেন্স ছাড়া এই বিপুল পরিমাণ ব্যাটারিচালিত রিক্সা, ইজিবাইক ও অটো রিক্সা
অবাধে চলতে থাকায় রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে এসব যানবাহন
চলাচলে প্রশাসনিক কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যানজটের ভোগান্তিতে সাধারণ
নাগরিকরা। এদিকে ছয় সিটের অটোরিকশা আটকে জরিমানা করাকে অমানবিক বলে
লাইসেন্সের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে চালকরা। চালকরা জানান, জরিমানার জন্য যে
টাকা আদায় করা হয় তা পুরোটাই বহন করতে হয় চালকদের - একবার পুলিশের হাতে অটো
রিক্সা আটকে গেলে তা ছাড়িয়ে আনতে যে জরিমানার টাকা দিতে হয় তা ছাড়িয়ে আনা
খুবই কষ্টসাধ্য এসব নিম্নের মানুষের জন্য।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের
লাইসেন্স ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অটোরিক্সা কিংবা ইজি বাইকের
কোন বৈধ লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার নেই। তবে এইসব যানবাহন গুলো নিয়ন্ত্রণে
আনার পরিকল্পনা করলেও বারবার তা ভেস্তে গিয়েছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক
আমিরুল কায়ছার জানান, অবৈধ অটোরিকশা বৈধ করার কোন সুযোগ নেই। তবে এগুলো
একেবারে বন্ধ করে দিলেও - তার বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে। কুমিল্লা নগরীর যানজট
নিরসন নিয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সাথে কথা
হয়েছে। এসব নিয়ে একটি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, নিবন্ধিত পায়ে
চালিত রিকশার জন্য বছরে ১৩০ টাকা করে আদায় করা হত। ২০২২ ২৩ অর্থবছরে বছরে
মোট ১০ হাজার ৫৩০টি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়। তবে এখন আর পায়ে চালিত রিকশা
নেই। যে কারণে টু সিটার ইজিবাইকের লাইসেন্সের সার্ভে করা হয়েছিলো। ১০ হাজার
ফরম বিক্রি করা হয়েছে। ৯ হাজার ৪ জমা পড়েছে। এসব ইজিবাইকের জন্য বছরে ৫
হাজার টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। তবে সবকিছুই পরিকল্পনা করে আবার
বন্ধ হয়ে গেছে। লাইসেন্স বিহীন ভাবেই অটোরিকশা - ইজিবাইক চলছে নগরীর
রাস্তায়।
টোকেন কিংবা রশিদ দিয়ে এসব যানবাহন চালানোর বিষয়ে রাজস্ব
কর্মকর্তা জানান, আমরা কোন রশিদ কিংবা টোকেন দিয়ে যানবাহন পরিচালনা করি না।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নামে এসব অটোরিকশা ইজি বাইকের দোকান বাণিজ্য চলে
আসছিল সেটা সবাই জানে। এইসব এখন বন্ধ করে নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা আনার বিষয়ে
সবাইকে তো হয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা
গেছে, কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ৪০ হাজারেরও বেশি অটো রিক্সা ইজিবাইক
ও ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল করে। যা কুমিল্লা নগরীর সড়কের তুলনায় ধারণ
ক্ষমতার অতিরিক্ত। এসব যানবাহন গুলো বিভিন্ন গ্যারেজ থেকে পরিচালিত হয়।
লাইসেন্স না থাকায় ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন সময় আটক করা হয় এসব
যানবাহনগুলোকে। তবে জরিমানা ও আটক করেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না এসব
যানবাহন।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
নাজমুল হাসান রাফি জানান, অবৈধ অটো রিক্সা গুলোকে বিভিন্ন সময় আটক করে এবং
জরিমানা করে। এসব জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। সমন্বিত পরিকল্পনা
না করলে এসব অটোরিকশা ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।