চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে ঠিকাদার
যুবলীগ নেতা সুমন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে যাত্রাপুর-পারুয়ারা ২
কিলোমিটার ৩শ’ মিটার সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী দেখা গেছে। তবে
এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সড়কের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলীর
নির্দেশে ঠিকাদার নতুন ইট বা খোঁয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের
যাত্রাপুর থেকে শ্রীপুর ইউনিয়নের পারুয়ারা পর্যন্ত ২৩০০ মিটার সড়ক
পূনর্বাসন করার জন্য ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮১৯ টাকা চুক্তিতে টেন্ডার
পায় মুন্সিরহাট ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি সুমন পাটোয়ারীর প্রতিষ্ঠান
মেসার্স পাটোয়ারী এন্টারপ্রাইজ। সড়কের নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ১৮
ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৮ আগস্ট শেষ হওয়ার নিয়ম ছিল।
অভিযোগ উঠেছে,
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করলেও দীর্ঘ ৫ মাস কাজ বন্ধ
রাখে। গত ৫ আগস্টের আগে এলাকাবাসী ঠিকাদার সুমন পাটোয়ারীকে জানালেও তিনি
ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কোন কিছুর তোয়াক্কা করেননি। সরকার পতনের পর সড়কের
পাশের গ্রামগুলোর ছাত্র-জনতা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ঠিকাদার সুমন পাটোয়ারী
কাজ বন্ধ রেখে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। সম্প্রতি তিনি কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ওই সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করলে বিক্ষুদ্ধ
এলাকাবাসী অনিয়মের প্রতিবাদ করে। বুধবার বিকেলে পারুয়ারা গ্রামবাসী সড়কটি
সঠিকভাবে নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ করে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দৃষ্টি
আকর্ষণ করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সড়ক ও সড়কের কালভার্ট নির্মাণে
নিম্নমানের ইট বা খোঁয়া, বালি ও কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে
সড়কের অনেক স্থানে বালির পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
শ্রীপুর
ইউনিয়নের পারুয়ারা গ্রামের সবুজ আহমেদ ও মোঃ রায়হান নামে দুই যুবক ক্ষোভ
প্রকাশ করে বলেন, ‘যাত্রাপুর-পারুয়ারা সড়কের পুরাতন কার্পেট না সরিয়েই
নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নতুন কার্পেটিং করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অল্প
কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন কার্পেটিং উঠে যাবে’।
একই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব
আবুল খায়ের মজুমদার ও সত্তোর্ধ্ব জাবেদ আলী বলেন, বিল্ডিং ভাঙা পুরাতন ইট
দেয়ার কারণে সড়কটি টেকসই হবে না। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে
কালভার্টগুলো ভেঙে যাচ্ছে। আমরা গ্রামবাসী সড়কটি ভালোভাবে নির্মানের জন্য
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি’।
সড়কের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান
মেসার্স পাটোয়ারী এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর সুমন পাটোয়ারী বলেন,
‘কালভার্টের ভাঙা কিছু পুরানো ইট ছিল। ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা হয়েছে, পুরানো
ইটগুলো সরিয়ে নতুন ইট বা খোঁয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হবে’।
সড়কের
দায়িত্বে থাকা এলজিইডি’র চৌদ্দগ্রাম উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র
রায় বলেন, ‘পুরাতন খোঁয়া সরিয়ে নতুন খোঁয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণ করার জন্য
ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। গত বন্যার কারণে যেসব স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে,
সেখানে নতুন করে খোয়া ফেলে ভরাট করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে’।