জাতীয়
ক্রিকেট লিগে চার রাউন্ডে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটি এসেছে সিলেট বিভাগের
উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অমিত হাসানের ব্যাট থেকে। প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার
৬৩৮ মিনিট বা ১০ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ব্যাট করে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন। প্রথম
শ্রেণির ক্রিকেটে সময়ের হিসাবে যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের তৃতীয় দীর্ঘতম
ইনিংস।
২০১৯ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে বেশ আলো
ছড়িয়ে যাচ্ছেন অমিত। ৩৩ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২৪২৫ রান করেছেন ৪৯.৪৮ গড়ে।
যেখানে নামের পাশে সেঞ্চুরি আছে ৮টি, ফিফটি ৯টি।
অমিতের পারফরম্যান্স
নজরে রেখেছেন জাতীয় নির্বাচকরাও। নির্বাচক প্যানেলের সদস্য হান্নান সরকার
বুধবার মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে বলেছেন, ‘অমিতের বিষয়টা আমি পরিষ্কার করছি।
অমিত কিন্তু শুধু এই বছরের পারফরম্যান্স নয়। সার্বিক পারফরম্যান্সেই কিছুটা
সিনারিও (নিজের সামর্থ্য) দেখানোর চেষ্টা করেছে। জাতীয় লিগে অভিষেক হওয়ার
পর থেকে সে প্রতি বছর রান করেছে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। এরপর তার পরের
ধাপটা হলো এইচপিতে আসা বা পরের প্রোগ্রামে আসা। সেখানে সে তিন বছরের বেশি
সময় ধরে আছে। এইচপিতে তাকে বেশ কিছু ম্যাচ খেলানো হয়েছে আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটারদের বিপক্ষে। এবার যে অস্ট্রেলিয়া সফর হয়েছে এইচপির, সেখানেও সে
ছিল। চারটা ইনিংসে ব্যাটিং করেছে। সেখানে আমি ছিলাম। তার ব্যাটিং দেখেছি।’
ঘরোয়া
ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে ব্যবধান তা অনেকের পারফরম্যান্সে ফুটে উঠে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভুগতে
থাকেন। খুব সহজেই আবার দল থেকে বাদ পড়ে যান। অমিতের ক্ষেত্রে যেন এমন কিছু
না হয় সেদিকে নজর দিয়েছেন নির্বাচকরা। তাকে পুরোপুরি তৈরি করে, আন্তর্জাতিক
মানের বানিয়ে তাকে জাতীয় দলে নেওয়ার ইচ্ছা হান্নানের।
‘এই ধরনের
ক্রিকেটার যারা নিয়মিত পারফর্ম করছে, তাদেরকে কঠিন একটা মঞ্চে নিয়ে বিপদে
ফেলার চেয়ে তাকে আরও কীভাবে আমরা আন্তর্জাতিক মানে ক্রিকেটার বানিয়ে নিতে
পারি, সেদিকে নজর দিতে হবে। এখানে বলার বা লুকোচুরির কিছু নেই। আমাদের
ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে অনেক বড় একটা পার্থক্য আছে। প্রায়ই
দেখবেন ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফর্মার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিয়ে ভুগতে থাকে।
তখন এক-দুই ম্যাচ খেলার পর তাকে নিয়ে আবার অন্য চিন্তা করতে হয়েছে। অমিত
এমন একজন ক্রিকেটার, যে নিয়মিত রান করছে। তাকে আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে
রেখেছি। প্রস্তুত করছি। আমি বিশ্বাস করি, একজন ক্রিকেটারকে সুযোগ দিলে তাকে
যেন যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়। আর সেই সুযোগ দেওয়ার আগে তাকে পরিপক্ক বা
যথাযথভাবে তৈরি করে নিয়ে যাওয়াটা তার জন্য যেমন ভালো, আমাদের জন্যও ভালো।’
২৩
বছর বয়সী ক্রিকেটারকে শুধু যত্নে গড়ে-ই নয়, মাঠের বাইরে ও ভেতরে নানা
পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক করানোর ভাবনা হান্নানের, ‘আরেকটা
জিনিস, একজন ক্রিকেটারকে অভিষেক করানোর ক্ষেত্রে কোন কন্ডিশনে, কোথায় করালে
ভালো হয়, এই বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। অনেকগুলো বিষয় এখানে আলোচনা
হয়েছে। অমিত আমাদের কাছাকাছি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এমন না যে, অমিত শুধু
এই বছর রান করেছে। সে প্রতি বছরই রান করছে এবং খুব কাছাকাছি রয়েছে।’