প্রকাশ: বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪, ১:৩২ এএম |
কুমিল্লা
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) থেকে বের হওয়া বিষাক্ত তরল বর্জ্য
বছরের পর বছর ধরে দক্ষিণ কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানের পরিবেশ নষ্ট করছে।
ইপিজেডের কলকারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য বেশ কয়েকটি খাল-বিল হয়ে ডাকাতিয়া
নদীতে গিয়ে মিশছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ও
আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। বিষাক্ত তরল বর্জ্যের কারণে ওইসব এলাকায় কমে
গেছে ফসলি জমির উৎপাদন; জলাশয় থেকে সব ধরনের দেশিয় মাছও প্রায়বিলুপ্ত হয়ে
গেছে। এসব জলাশয়ের পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগবালাই। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে
দীর্ঘদিন থেকেই দক্ষিণ কুমিল্লার মানুষজন দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে অগ্রগতি
তেমন কিছুই হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে কুমিল্লা
ইপিজেডের সার্বিক অগ্রগতি ও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার-সিইটিপি কার্যক্রমের
বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ রপ্তানী
প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ -বেপজা। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে
কুমিল্লা ইপিজেডের বেপজা জোন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য
রাখেন কুমিল্লা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব, সিইটিপির
পরিচালক (অপারেশন) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মির্জা মোহাম্মদ মনজুর কাদির,
পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোবাশে^র হোসেন
রাজিব, বেপজার জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ।
মতবিনিময় সভায় জানানো
হয়, কুমিল্লা ইপিজেডে বর্তমানে ৪৬টি দেশি-বিদেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনরত
আছে এবং আরো ৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নাধীন আছে।ইপিজেডের
শিল্প-প্রতিষ্ঠানসমূহের তরল বর্জ্যর পাশাপাশি সুয়ারেজ বর্জ্য পরিশোধন
কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং পরিদর্শনের জন্য ইপিজেড কর্তৃপক্ষ একটি
সার্ভিস ওরিয়েন্টড কোম্পানি মেসার্স সিগমা ইকো-টেক লিমিটেডের সাথে ২০১১
সালে চুক্তি সম্পাদন করে। কোম্পানীটি ২০১৫ সালে ইপিজেডের সকল তরল বর্জ্য
এবং সুয়ারেজ বর্জ্য একটি ডেডিকেটেড এফ্লুয়েন্ট কালেকশন নেটওয়ার্ক এর
সাহায্যে সংগ্রহ করে সিইটিপির মাধ্যমে পরিশোধন কার্যক্রম শুরু করে এবং
পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী সিইটিপির পরিশোধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে
পরিচালনা করে আসছে। ইপিজেডের সব ধরনের তরল বর্জ্য সিইটিপি একটি নির্দিষ্ট
নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংগ্রহ করে পরিশোধন করে ইপিজেডের দক্ষিণ পাশের খালে
নিষ্কাশন করে, যা ইপিজেডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সিটি কর্পোরেশনের ২ টি
ভি-চেইনের সুয়্যারেজ বর্জ্যরে সাথে মিশ্রিত হচ্ছে এবং পরবর্তীতে বিজয়পুর
নামক স্থানে ৫ টি খাল একত্রিত হয়ে ডাকাতিয়া নদীতে পতিত হয়।
সভায় ইপিজেড
কর্তৃপক্ষ জানায়, ইপিজেডের বর্জ্য পরিশোধনের পর যেসব খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়
সেই খালগুলোর বিভিন্ন স্থানেই প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেই খালগুলো খনন ও
সংস্কারের জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক
যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। খালগুলোতে পানির প্রবাহ বাড়লে এবং খালগুলো সংস্কার হলে
মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে।
মতবিনিময় সভায় শেষে সাংবাদিকদের
সাথে নিয়ে ইপিজেডের শিল্প-প্রতিষ্ঠানসমূহের তরল বর্জ্যের পাশাপাশি সুয়ারেজ
বর্জ্য পরিশোধন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন কর্মকর্তাগণ।