সাবেক
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেছেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের
কারণেই সংসদ সদস্যদের (এমপি) চরিত্র নষ্ট হচ্ছে। এজন্য আনুপাতিক হারে
নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক এই সিইসি।
বুধবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের আমন্ত্রণে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আসেন সাবেক এই সিইসি।
তিনি
বলেন, সংসদীয় পদ্ধতি থাকবে। আমেরিকান ওই দিকের বিশিষ্ট সিস্টেম আনার দরকার
নাই। নির্বাচনকে সরলীকরণ করতে হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য যদি বন্ধ করা না যায়
সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। কেননা, মনোনয়নপত্র বাণিজ্যটাই
নির্বাচনটাকে ট্রেডিংয়ে এনেছে। ২০ কোটি টাকা দিয়ে কিনব, ১০ কোটি টাকা ছড়াব।
পাঁচ বছর থাকলে দুইশ, আড়াইশ কোটি টাকা লাভ করব, সোজা হিসাব। এমপি চরিত্র
নষ্ট হচ্ছে এজন্য। কাজেই আনুপাতিক হারে নির্বাচন করেন।
নতুন থিওরি দিয়ে
সাবেক এই সিইসি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ, তাদের দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে ভোট
চালান। কোনো ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কিচ্ছু নেবেন না। তাদের মনকে দৃঢ় করেন।
তারা দেশের মালিক। তাদের ওপর দায়িত্ব দেন। এখানে ভোটকেন্দ্রগুলো স্থায়ী
করেন। আড়াই লাখ ভোটকেন্দ্র করেন। প্রতি কেন্দ্রে ৫শর বেশি ভোটার থাকবে না।
ভোটার ক্লাব করেন। ১১ জনের নির্বাহী কমিটি থাকবে। পাঁচজন মহিলা, ছয়জন
পুরুষ; তারা ভোটটা চালাবে। ছাত্র-জনতা শিক্ষিত যারা আছেন, তারা
স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা দেখবে।
তিনি বলেন, ভোট দেবে মানুষ দলকে।
যখন দলকে দেবে, তখন পয়সা খরচের বিষয় থাকবে না। (মনে করি) ১২ কোটি ভোটার, নয়
কোটি লোক ভোট দিল। ১৫টা দল আছে। ভোট যদি নয় কোটি হয়ে থাকে, ৩০০ আসন থাকলে ৩
লাখ ভোট হলে হয়। কাজেই কোনো দল তিন লাখ পেলে সংসদে একজন, ছয় লাখ হলে দুইজন
এভাবে আসন পাবে। ভোটের আগে তৃণমূলে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন
করে দলগুলো ইসিকে তালিকা দেবে। ইসি লোকটা ভাল কি মন্দ, পাবলিক মতামত নেবে।
অবজেকশন এলে তাকে বাদ দেওয়া হবে। ফুটবলের প্লেয়ার বদলের যেমন সুযোগ থাকে,
তেমন করে বছরে পাঁচ জন বদলের সুযোগ থাকবে। তাহলে ভালো লোক আসবে কি-না। ৩০০
সংসদীয় আসন থাকবে না। সারাদেশ হবে একটা আসন।
তিনি আরো বলেন, আমি ছয়টা
নির্বাচন করি। সংসদ নির্বাচনের যে সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে, তার প্রতিনিধি
ইউপিতে হবে। কাজেই এক নির্বাচনেই সব শেষ করা যায়। এতো কাগজ নষ্ট, এতো ব্যয়
কমে আসবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব দল চায় না-কয়টা দল আছে যে,
আইন অনুসরণ করে দল হয়েছে। যেই দেশের দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই, তারা কী করে
গণতন্ত্র কায়েম করতে পারে।