দক্ষিণ-পূর্ব
বাংলার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ১২৫ তম
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। আনন্দ র্যালি এবং ঢাকঢোল পিটিয়ে একটি
বর্ণিল আয়োজনে মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা,
কর্মচারীদের অংশগ্রহণে।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা
রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়ের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শুভেচ্ছার মধ্যদিয়ে
অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় কান্দিরপাড় উচ্চমাধ্যমিক শাখা
থেকে বর্ণিল আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। নগরীর লিবার্টি মোড়, পূবালী চত্বর,
ডিসি সড়ক হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজের জামতলায় এসে
শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এসময় কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কয়েক হাজার
শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রা শেষে কেককাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
হয়।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ৫৬তম অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.
আবুল বাশার ভূঁঞার সভাপতিত্বে এসময় ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল
মজিদ, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক গাজী মোহাম্মদ গোলাম সোহরাব হাসান, যুগ্ম
সম্পাদক মো. মুনছুর হেল্লালসহ কলেজের ২২টি বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা কলেজের
৯টি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা।
বক্তব্যে
অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞা বলেন, রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়
১৮৯৯ সালে এ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ভিক্টোরিয়া কলেজ বৃহত্তর কুমিল্লা
অঞ্চলের আলোকবর্তিকা। এ পিদিমের আলো দিনদিন বাড়াতে ভিক্টোরিয়া পরিবার দৃঢ়
প্রতিজ্ঞ। আমরা সবার সহযোগীতা চাই।
তিনি আরও বলেন, জুলাই
অভ্যুত্থানের আমাদের কলেজের অনেক শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে। আবার অনেকে সরাসরি
অংশগ্রহণ করেছে। আমরা তাদের সম্মানের ব্যবস্থা করবো। আমরা আহত
শিক্ষার্থীদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। শিঘ্রই আপনারা তালিকায় নাম
দেয়ার নোটিশ পাবেন। সবাই তা নিয়ম অনুযায়ী জমা দেবেন।
উল্লেখ্য, এদিন
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়ের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী।
১৮৯৯ সালের এই দিনে আনন্দচন্দ্র রায় রাণী ভিক্টোরিয়ার নামে নামকরণ করে এ
কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাচীনত্বের বিচারে পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধকার যুগের
শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এ কলেজ। ১৯৫২ সালের ভাষা
আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে এর ভূমিকা ছিলো অনন্য। মহান
মুক্তিযোদ্ধে ভিক্টোরিয়ার ৩৩৪ ছাত্র অংগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন
শহিদ হয়েছেন। শহরের কান্দিরপাড় রাণীর দীঘির পাড়ে কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখা
এবং শহরতলীর ধর্মপুরে অনার্স-ডিগ্রি শাখা অবস্থিত। প্রায় ২৯ হাজার
শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর থাকে কলেজের ক্যাম্পাস। ২২টি বিষয়ে অনার্স ও
১৮টি বিষয়ে মাস্টার্স পড়ানো হয় এখানে।
এক সময় ভিক্টোরিয়া ক্যাম্পাস
উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মণ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, ফরিদ
উদ্দিন খাঁ, অদ্বৈত্য মল্লবর্মণ, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, অধ্যাপক রফিকুল
ইসলামের মতো অসংখ্য খ্যাতনামা সেবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে।