মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
১ মাঘ ১৪৩১
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
প্রকাশ: সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৭ এএম |

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এখনো প্রধান যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার একটি হচ্ছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। সারা দেশেই ঘটছে খুনের ঘটনা। সেই সঙ্গে বেড়েছে ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি। বাড়ছে হুমকি-ধমকি ও চাঁদাবাজির ঘটনা-যেমনটি বলা হয়েছে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে।
নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার পরও পথে-ঘাটে, এমনকি নিজের বাসার ভেতরেও মানুষ নিরাপত্তাহীন।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চুরি, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন কিছুটা কমলেও খুন, ডাকাতি ও অপহরণ বেড়েছে। চলতি বছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে খুনের ঘটনা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। এই সময়ে সারা দেশে ৫২২টি খুনের মামলা করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের এই দুই মাসের তুলনায় ৩৪টি বেশি।
পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সারা দেশে মামলা করা হয়েছে ২৫ হাজার ৪৫৬টি। এর মধ্যে খুনের মামলা করা হয়েছিল ৪৮৮টি। পুলিশের তথ্য বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে খুন ছাড়াও ছিনতাই, ডাকাতি, দস্যুতা, শিশু নির্যাতন, অপহরণ, সিঁধেল চুরির ঘটনা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।
এটি ঠিক যে সমাজের কিছু মানুষ যেন দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে।
এক শ্রেণির মানুষ পুলিশ-প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, মানবিক মূল্যবোধ-কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না, যে কারণে সমাজে খুনখারাবিসহ অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এ রকম অবনতির কারণ কী? কেন খুনখারাবির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না? কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না নৃশংসতা, অমানবিকতা?
পেশাগত অপরাধীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়া এবং ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর কারণেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অনেকে মনে করছেন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পুলিশের কাজের গতিহীনতা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সারা দেশে অনেক থানায় হামলা হয়। অস্ত্র, গোলাবারুদ লুট হয়।
কয়েকটি কারাগারেও হামলা হয়। অস্ত্র লুটের পাশাপাশি অনেক অপরাধীও বের হয়ে যায়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর একটি দীর্ঘ সময় পুলিশের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখনো পুলিশ ট্রমার মধ্যেই আছে। স্বাভাবিক হতে না পারায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছে। আগের মতো স্বাভাবিক হতে আরো কিছুটা সময় লাগবে। পুলিশের বহু গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় তাদের চলাচলেও সমস্যা রয়েছে। থানা থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের একটি বড় অংশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সেসব আগ্নেয়াস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে। ফলে দেশব্যাপী অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে।  
সারা দেশেই অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে খুনখারাবি, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, রাহাজানি, লুটতরাজের মতো ঘটনা। ফলে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে। 
নিরাপদে বসবাস করা মানুষের মৌলিক অধিকার। আর মানুষের সেই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। খুনখারাবির লাগাম টেনে ধরতে না পারলে জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বোধ তীব্র হবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, সেটি আমরা কেউ চাই না। আমাদের প্রত্যাশা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক চেষ্টায় সুস্থ পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে পুলিশে সোপর্দ
কুমিল্লায় ‘প্রেমিকের’ সাথে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই নারী
অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ
প্লাস্টিক জমা দিন গাছের চারা নিন
শীতে ব্রাহ্মণপাড়ায় বাড়ছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুবি ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
নিরাপত্তাহীনতায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান
কুমিল্লায় সিঙ্গার শো-রুমে বেকো পণ্যের উদ্বোধন
টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস
এক মাসে ৭ খুন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২