নিজস্ব
প্রতিবেদক : রাজধানীর বাজারগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।
কিছু কিছু দোকানে যদিওবা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর মূল্য ঘষে তুলে ফেলা বা
মূল্য দেখা গেলেও সে তুলনায় বেশি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
বোতলজাত
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিদিনই ক্রেতা-বিক্রেতারা বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজারে ঘোরাঘুরি করে খোলা তেল কিনেই বাড়ি ফিরছেন
ক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী যোগসাজশ করে তেলের দাম বাড়ানোর
জন্য সংকট তৈরি করছে। আর, বিক্রেতাদের ভাষ্য, কোম্পানিগুলো থেকেই সরবরাহ
কম।
শুক্রবার রাজধানীর নিকেতন ও মহাখালী কাঁচাবাজারে কয়েকটি দোকান ঘুরেও ১ লিটার বা ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যায়নি।
এই
বাজারের মায়ের দোয়া স্টোর্সের সামনে বচসা হচ্ছিল ক্রেতা-বিক্রেতার।
ক্রেতার ভাষ্য, বোতলের দাম ঘষে তুলে ফেলা হয়েছে। ১ লিটারের সয়াবিন তেল তিনি
দুদিন আগেও কিনেছেন ১৬৩ টাকায়। সেই বোতলের দাম ঘষে তুলে ফেলে বিক্রেতা ১৭০
টাকা চাইছেন।
এ সময় বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, “আমি কাল সন্ধ্যায় এই
মাল আনছি। কারওয়ান বাজার থেকে। এখন আনছিই এভাবে। এছাড়া নাই। কিনাও অন্য
সময়ের চাইতে বেশি। তাই ১৭০ টাকা করেই বিক্রি করতে হইতেছে।”
সেখানে তেল
কিনতে আসা শাহরিয়ার মাহমুদ নামের এক ক্রেতা বলেন, “এগুলো আসলে ঠিক না। ওই
যে হয় না, হঠাৎ একট জিনিস নাই করে দিয়ে দাম বাড়িয়ে ফেলার যে ব্যাপারটা,
ওইরকম আরকি। এটা শুরু হইছিল হাসিনার আমলে। এখনও ব্যবসায়ীরা সেই ঐতিহ্য ধরে
রেখেছেন!”
সয়াবিন তেলের এই সংকটের জন্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায় দিলেন নিকেতন কাঁচাবাজারের মুদি দোকানি নিরঞ্জন সাহা।
তিনি
বলেন, “সামনে রমজান মাস। সেটাকে সামনে রেখে বাজারে কিছুটা কৃত্রিম সংকট
তৈরি করে নিয়েছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যাতে দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা
করা যায়।”
পরে মহাখালী কাঁচাবাজারে গেলে মুদি দোকানি আবদুর রহমান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কম।
“এর মধ্যে বোতলজাত ১ বা ২ লিটার সয়াবিন তেলের সংকট বেশি। এজন্য আমরা পর্যাপ্ত তেল পাচ্ছি না।”
বাজারগুলো
ঘুরে দেখা গেছে, রূপচাঁদা এক লিটার সয়াবিন তেলের গায়ের দাম ১৬৭ টাকা, দুই
লিটার বোতলের গায়ের দাম ৩৩৪ টাকা ও পাঁচ লিটার ৮১৮ টাকা।
কিন্তু, বেশিরভাগ দোকানে এ দামের চেয়ে অন্তত ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
বাজারে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি পাম ও সয়াবিন তেল আমদানিতে প্রতি কেজিতে শুল্ক-কর ১০ থেকে ১১ টাকা কমানো হয়।
বিক্রেতারা
বলছেন, শুল্ক কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল লিটারপ্রতি ৫
টাকা বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে খোলা পাম অয়েল ১৬০-১৬২ টাকা
এবং সয়াবিন ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ
অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আফরোজা রহমান জানান, ঢাকা
মহানগরসহ সারাদেশে আলু, পেঁয়াজ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য
স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বাজার তদারকি কার্যক্রম
পরিচালনা করা হচ্ছে।
ঢাকায় ভোক্তা অধিকারের ৫টি টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।