কুমিল্লা
দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় বিলের মধ্যে থেকে দুই যুবকের মরদেহ
উদ্ধার করা হয়। আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের মরদেহ
উদ্ধার করে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। নিহতরা হলেন, দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ
গ্রামের মৃত দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২৫) অন্যজন হলেন খাগড়াছড়ি জেলার
রামঘর উপজেলার সুখাকেন্দ্রায় গ্রামের রহুল আমিন মিয়ার ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)।
নিহত দুজনেই ইন্টারনেটের বিল উত্তোলন, লাইন সংযোগ ও মেরামত কাজ করতেন।
স্থানীয়দের
মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এটা কি
হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, বিলের মধ্যে দুই যুবকের মরদেহ পড়ে
থাকার খবর পেয়ে দূরদূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকেন। খবর
পেয়ে নিহত মনির হোসেনের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মনিরের
ছোট বোন জান্নাত আক্তার জানান, মনির আমার একমাত্র ভাই, তাকে কারা মারল আমরা
বলতে পারব না। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে, তাদের এখন কি হবে।
স্থানীয়
কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মরদেহগুলো খড়ের ওপর পাওয়া গেছে, এর ২০/২৫ ফুট দূরে
খড়ের একটি গাদা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোন এক সময়ে তারা ওখানে থেকে
খড় এনে এখানে বিছিয়ে আসন বানিয়ে ওখানে বসে মাদকসেবন করছিল। মাদকে হয়তো
বিষাক্ত কিছু ছিল তা সেবনের পর শ^াসক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়।
স্থানীয়
ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, সকালে দোয়াইজলা বিলে কৃষকরা কাজ করতে এসে
দুই জনের মরদেহ দেখে আমাকে খবর দেয়। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পুলিশ খবর দেই।
তারা দুইজনই ডিস ও ইন্টারনেট বিলে উত্তোলন ও সংযোগ লাইনের কাজ করত। এটি
হত্যাকাণ্ড কিনা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ডিস ও ইন্টারনেট
মালিক বদিলউল আলম সানোয়ার বলেন, মনির ও মোহান আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ
করত। এর মধ্যে মনির নিজের বাড়িতে থাকত আর মোহন অফিসে থাকত। মোহনের বাবা
আমাকে বলেছেন রাত ১১টার দিকে শেষবার মোহনের সাথে তার কথা হয়েছে। ১১টার পর
তাকে অফিসেও পাওয়া যায়নি। তাঁরা কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করত কিনা জানতে
চাইলে বদিউল জানান, দুইজনের মধ্যে মনির মাদকাসক্ত মোহন করত কিনা জানিনা।
বিষয়টি
নিশ্চিত করে দেবিদ্বার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ মো.শাহীন জানান, আমি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, এটা হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা এখন বলা
সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঘটনাস্থল থেকে সিরিঞ্জ, সিগারেট, মোবাইল স্পিরিটের
খালি বোতলসহ বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
এছাড়াও আরও তথ্য উপাত্ত ও আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে
ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, তদন্ত
চলছে, তদন্তের পরে বিস্তারিত বলা যাবে।