প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:০৪ এএম আপডেট: ২০.১২.২০২৪ ১:২২ এএম |
কুমিল্লার স্কুলে স্কুলে চলছে ভর্তিযুদ্ধ। মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন ক্লাসে নিজের সন্তানকে পছন্দের স্কুলে ভর্তি করাতে দৌড়ঝাপ করছে অভিভাবকরা। তাদের উদ্দেশ্য মানসম্মত একটি বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েকে পড়ালেখা করিয়ে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করা। কিন্তু শিক্ষার্থীর তুলনায় বিদ্যালয় এবং আসন সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর ইচ্ছা থাকলেও সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। এতে হতাশা নিয়ে বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা ফিরচ্ছেন পুরনো ঠিকানায়। আবার অনেকে পুরনো ঠিকানায় ফিরতে না পারায় বাধ্য হচ্ছেন মানহীন বিভিন্ন বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনে সন্তানকে ভর্তি করতে।
গেলো ১৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জিলা স্কুল, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মডার্ন স্কুল, শিক্ষাবোর্ড মডেল, কালেক্টরেট স্কুল, ফরিদা বিদ্যায়তন, ইবনে তাইমিয়াসহ জেলা শহরের বিভিন্ন মানসম্মত স্কুলগুলোতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে লটারীর মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়। এ লটারী যুদ্ধে অংশ নেয় কুমিল্লা জেলা শহর, ১৭ উপজেলা এবং আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লাখ লাখ শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ অভিভাবকদের লক্ষ্য থাকে কুমিল্লা জিলা স্কুল ও নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বা এর কমবেশি সম্মানের বিভিন্ন স্কুল। কিন্তু এবারের মাধ্যমিকের ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েও লটারীতে নাম না আসায় ভর্তি হতে পারছেন না শতশত মেধাবী শিক্ষার্থী।
খোজ নিয়ে দেখা যায়, এ লটারী যুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অনেক সিট থাকলেও ৭ম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় সিটের সংখ্যা অপ্রতুল। এতে করে এ ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ে সচেতন অভিভাবকগণ।
যেমন শহরের তালপুকুর পাড়ের বাসিন্দা ইলমা আহমেদ আকা নামে এক শিক্ষার্থী কুমিল্লার মডার্ন স্কুলের ৮ম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ভর্তির জন্য আবেদন করেন। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পাওয়া এ শিক্ষার্থী তার লটারীতে নাম আসেনি। সে ক্যাডেট এ ভর্তি পরীক্ষা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ৪ জানুয়ারী ক্যাডেটে স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা। সেখানে পরীক্ষা উর্ত্তীণ না হতে পারলে তা ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় তার অভিভাবক।
অন্যদিকে, ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দার শিক্ষার্থী শিমু ষষ্ঠ শ্রেনিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড ও মডার্ন স্কুলে। লটারীতে তাঁর নাম আসেনি দুই স্কুলের একটিতেও। শিক্ষায় মানসম্মত একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় তার প্রবাসী বাবা ও মায়ের। শিক্ষার্থী শিমুর চোখে মুখেও দেখা দিয়ে বিষন্নতার চাপ।
আরেক শিক্ষার্থী রাইসা। বাগিচাগাঁওয়ের বাসিন্দা রাইসা পুলিশ লাইন স্কুল ও কালেক্টরেট স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। লটারীতে দুইটি বিদ্যালয়ের একটিতেও আসেনি তার নাম। তার অভিভাবক জানায়, পছন্দের স্কুলে ভর্তির আবেদনের ফলাফল তাদের হতাশা করেছে। গ্রাম থেকে শহরে এসেছেন রাইসাকে একটি মানসম্মত স্কুলে ভর্তি পড়ালেখা করাতে। মনে হচ্ছে আবারও গ্রামে ফিরতে হবে।