কুমিল্লার
লাকসামে যুবদলের সাংগঠনিক কমিটি গঠন ও প্রতিনিধি সভাকে কেন্দ্র করে
দু’গ্রুপে সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দু, গ্রুপ ককটেল
বিস্ফোরণ, অস্ত্রের মহড়ায় উপজেলা সদরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।মঙ্গলবার দুপুরে
লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পথচারী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে দোকানপাট বন্ধ করে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।এ
নিয়ে লাকসামের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,
যুবদলের সাংগঠনিক কমিটি গঠন ও প্রতিনিধি সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি দলীয়
সাবেক এমপি কর্নেল অবঃ আনোয়ারুল আজিম ও কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল
কালাম গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিলে
দৌলতগঞ্জ বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা
ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় অনেকের হাতে জয়েন্ট পাইপ, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতিসহ
দেশিয় অস্ত্র দেখা গেছে। এতে বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে
পড়েন। তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল গিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ
করে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানা যায়,
মঙ্গলবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের একটি সাংগঠনিক টিম লাকসামে
প্রতিনিধি সভায় অংশগ্রহণ করার কথা জেনে অন্য গ্রুপও তাদের সভায় যোগদানের
অনুরোধ করেন। প্রথমে জেলা যুবদলের সাংগঠনিক টিম পৃথক সভায় উপস্থিত থাকার
আশ্বাস দিলেও পরে কর্নেল (অব.) এম. আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের নেতা-কর্মীদের
তাদের সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। দুপুরে জেলা যুবদলের
সাংগঠনিক টিমের নেতৃত্বে আবুল কালাম গ্রুপের কার্যালয়ে যুবদলের প্রতিনিধি
সভা শুরু হয়।
এ সময় কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের বিক্ষুব্ধ
নেতা-কর্মীরা দৌলতগঞ্জ বাজারে মিছিল বের করেন। মিছিলটি দৌলতগঞ্জ উত্তর
বাজার প্রদক্ষিণকালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে দুই গ্রুপ
মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এসময় উত্তর বাজার দলীয় কার্যালয়ের কাছে এবং মেইন রোড
চত্বরে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে
পড়লে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট ও মার্কেট বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী
পথচারী মাইনুল হোসেন জানান, উভয় গ্রুপের হাতে জয়েন্ট পাইপ, চাইনিজ কুড়াল,
চাপাতিসহ দেশিয় অস্ত্র দেখা গেছে। এছাড়া হেলমেট পরিহিত বেশ কয়েকজনের হাতে
পিস্তল দেখা যায়। মোহর মোহ মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণে ব্যবসায়ী ও পথচারী
নারী-পুরুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় যে যেখানে পেরেছেন অবস্থান নেন।
কর্নেল
(অব.) এম. আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের উপজেলা যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম জানান,
জেলা যুবদলের একটি সমন্বয়ক প্রতিনিধি দল লাকসাম আসেন সাংগঠনিক সভা করা জন্য
। ওই সভায় আমরা যোগদান করতে গেলে আমাদের বাধা দেয় কালাম গ্রুপ এতে আমাদের
সমর্থিত যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে
সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আবুল কালাম গ্রুপের উপজেলা
যুবদলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মানিক জানান, আমাদের কার্যালয়ে
যুবদলের প্রতিনিধি সভা চলাকালে অন্যগ্রুপ মিছিল বের করে। এসময় উত্তেজনা
দেখা দেয়। আমরা আমাদের গ্রুপের কর্মী, সমর্থকদের সংঘাত পরিহার করতে অনুরোধ
করলে তারা ফিরে আসে।
কর্নেল (অব.) এম. আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের উপজেলা
যুবদলের সাবেক সভাপতি ও গুম হওয়া বিএনপি নেতা হুমায়ুন পারভেজের ভাই গোলাম
ফারুক জানান, যুবদলের কমিটি নিয়ে জেলা যুবদলের একটি সমন্বয়ক প্রতিনিধি দল
লাকসাম আসেন। উভয় গ্রুপের সাথে প্রথমে বসার কথা থাকলেও তারা আজিম গ্রুপকে
একপর্যায়ে নিষেধ করে দেন। এতে উত্তেজিত হয়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিল বের
করে। পরে আমাদের লোকজনকে শান্ত করে আমরা নিয়ে আসি।
লাকসাম থানার ওসি
(তদন্ত) মো. ফারুক হোসেন জানান, উত্তেজনার খবর শুনে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক
অবস্থানে ছিল। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে আনে।