কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে
এলাকাছাড়া করার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ১০ জনের
নাম উল্লেখসহ ২২ জনকে আসামি করে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন
আব্দুল হাই কানু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা এ টি এম আক্তারু উজ জামান। তিনি বলেন, বাহকের মাধ্যমে এজহারের
কপি থানায় পাঠানো হলে আমরা সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করি। মামলার সব আসামিকে
গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মামলার এজাহারে আব্দুল হাই কানু উল্লেখ
করেছেন, গত ২২ ডিসেম্বর নিজ গ্রাম বাতিসার লুদিয়ারায় গেলে আবুল হাশেমের
নেতৃত্বে অন্য অভিযুক্তরা তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে কুলিয়ারা সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে যান। সেখানে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা কানুকে মারধর করে গলায় জুতার মালা
পরিয়ে এলাকাছাড়া করেন। এ সময় ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন অভিযুক্তরা। এতে তার সামাজিকভাবে ১০০ কোটি টাকার মানহানি
হয়েছে। মামলায় আবুল হাশেমকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় অহিদুর
রহমানকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এর আগে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে
পাঁচজনকে আটক করেছিল পুলিশ। তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার
আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় আটক ওই পাঁচজনের মধ্যে একজনকে
আসামি করা হয়েছে। আর দুজনের নাম সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওসি
আক্তার উজ জামান সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ যে পাঁচজনকে আসামি করেছে, তাঁদের
মধ্যে কুলিয়ারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন মজুমদারকে (৪৩) মামলায় এজাহারভুক্ত
আসামি করেছেন। আর বাকিদের মধ্যে দুজনকে তিনি সাক্ষী মেনেছেন। বিষয়টি
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আটকদের
মধ্যে কাকে কাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
গত রবিবার দুপুরে বীর
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করেন
স্থানীয় কয়েকজন। স্থানীয় আবুল হাশেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একদল লোক এ ঘটনা
ঘটান। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে
তোলপাড় সৃষ্টি হয়।