প্রতিটি জীবকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে মৃত্যুর মাধ্যমে।
জন্ম ও মৃত্যুর অন্তর্বর্তী সময়টুকুর নামই জীবন।
তবে মানুষের জীবনের এই গতি সবসময় অনুকূল থাকে না। আবার জীবনপ্রবাহ থেমেও থাকে না।
সুখ-দুঃখ, হাসিকান্না জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এসব ছাড়া জীবন হতেই পারে না। মূলত এসবের সংমিশ্রণ জীবনটাকে উপভোগ্য করে।
মানুষের
জীবন সামান্য ক’দিনের হলেও অমূল্য। হয়তো এ জন্য পথচলার হোঁচট আর
ব্যাথাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়- জীবনের মূল্য। শিক্ষা দেয়-
আঘাতগুলোকে শক্তিতে পরিণত করে ত্যাগী ও উদ্যমী হতে।
জগতে যারা বড়
হয়েছেন, তাদের প্রায় সকলেই জন্মের পর থেকে বড় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত
দুঃখ-কষ্ট সঙ্গে নিয়েই বড় হয়েছেন। অতঃপর সুখ-সমৃদ্ধিতে অবগাহন করেছেন।
আজন্ম দুধ-কলায় লালিত-পালিতরা জগতে সম্মান-খ্যাতি অর্জন করেছেন- এরূপ
মানুষের সংখ্যা ধরণীতে তেমন একটা নেই।
আমাদের জীবন ঘুড়ির সুতো আমাদের
কাছে নয়, মহান প্রভুর হাতে। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা
করেন। সেসব ক্ষেত্রে ধৈর্যহারা না হয়ে সবরের সঙ্গে ঈমান ও তাকদিরের ওপর
অটল-অবিচল থেকে দৃঢ়পদে অগ্রসর হওয়াই মানুষের কাজ ও কর্তব্য। দুঃখ-কষ্ট,
বিপদ-আপদ, ব্যথা-বেদনা এসবের সমন্বয়েই জীবন। যারা এগুলোকে আল্লাহর ইচ্ছা
মনে করে ধৈর্যসহ টিকে থাকতে পারেন, তারাই সফল হন।
ধৈর্য অনেক কঠিন। তাই তার ফলও বেশ সুস্বাদু, অসাধারণ। মহান প্রভুর ভাষায়- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা, ‘ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপকতর কল্যাণ কাউকে দেওয়া হয়নি। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম
সবরকারীদের জন্য এর চেয়ে উত্তম প্রতিদান, মূল্যবান পুরস্কার, আশার বাণী আর কী হতে পারে?
যে
পুরস্কার প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও
নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে
রয়েছেন। ’ -সূরা বাকারা
কোরআনে কারিমের অন্যত্র আরও ইরশাদ হয়েছে,
‘অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও
ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও- সবরকারীদের। যখন তারা বিপদে
পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তারই
সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত
অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়াতপ্রাপ্ত। -সূরা বাকারা